Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব

            প্রচলিত বই-পত্র, লোকমুখে প্রাপ্ত তথ্য, প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও তাঁর পরিবারবর্গের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে এই অধ্যায়ে বাসাইলের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের জীবনীসমূহ সন্নিবেশিত করা হলো। তবে এই তালিকা সম্পূর্ণ নয়। তথ্যের অভাবে অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তির জীবনী অনিচ্ছাকৃতভাবে বাদ রয়ে গেল বলে আন্তরিকভাবে দুঃখিত। প্রয়োজনীয় তথ্য পাওয়া গেলে পরবর্তী সংস্করণে তা সন্নিবেশিত করা হবে। নামের অদ্যাক্ষর অনুযায়ী বর্ণ-ক্রম অনুসরণ করে বিশিষ্ট ব্যক্তিগণের নামের বিন্যাস করা হয়েছে।

 

 

১।         আখতার হামিদ মাসুদ (মঞ্জু)ঃ

 

বাশাইল উপজেলার পাট খাগুরী গ্রামে ১৯৪৮ সনে ২১ জানুয়ারী জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মোঃ আব্দুর রাজ্জাক, পৈতৃক চাকরির সুবাদে শৈশবে নানান জেলায় লেখাপড়া করার সুযোগ হয়। ফরিদপুর জেলা স্কুল থেকে ১৯৬৩ সনে প্রথম বিভাগে এস,এস,সি ও ১৯৬৫ সনে কুষ্টিয়া কলেজ হতে কৃতিত্বের সঙ্গে এইচ,এস,সি পাশ করেন। ১৯৭২ সনে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্থাপত্যে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। স্থাপত্য ও প্রকৌশল কাজের উপদেষ্টা ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৮৭ সনে নরওয়ের ওসলো বিশ্বাবদ্যালয়ে প্রতিবন্ধী সহায়ক ডিজাইনের উপর উচ্চতর প্রশিক্ষণ লাভ করেন। ১৯৯২ সনে আখতার হামিদ মাসুদ (মঞ্জুর) শিক্ষাগুরু নরওয়ের ওসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়াত অধ্যাপক কার্লফ্রেডরিক লিন্ডস্ট্রম এর স্মৃতি রক্ষার্থে এবং পূজনীয় মাতার স্মরনে মার্থা লিন্ডস্ট্রর্ম-নূরজাহান বেগম উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। যৌথ উদ্যোগ নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা মহাসচিব ও  লায়ন্স ক্লাব ঢাকা আর্কিড এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে রয়েছে তাঁর সক্রিয় অবদান।

 

২।         আজিজুর রহমান তালুকদারঃ

আজিজুর রহমান তালুকদার বাসাইল উপজেলার টেংগুরিয়া পাড়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। যিনি নিজ এলাকায় এ. আর তালুকদার হিসাবে সু-পরিচিত ছিলেন। পিতা- মিজানুর রহমান তালুকদার। শৈশবে পিতৃহারা হয়ে নানা প্রতিকূলতার মাঝেও মাতৃস্নেহে ছাত্র জীবন অতিবাহিত করেন। তিনি মাকে খুব ভালবাসতেন। বিন্দুবাসিনী সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় হতে ১৯৩১ সনে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করার পর সা’দত কলেজ করটিয়ায় ভর্তি হন। ১৯৩৩ সনে এই কলেজ হতেই প্রথম বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করার পর ১৯৩৭ সনে অর্থনীতিতে স্নাতোকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি অবিভক্ত ভারতে বেঙ্গল সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে পুলিশ বাহিনীতে যোগদান করেন এবং বীরভূমের D.S.P হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। সুদীর্ঘ চাকুরী জীবনে নৈতিকতায় অটল থেকে দেশ ও মানুষের কল্যাণে নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৬৪ সনে ঢাকা রেঞ্জের D.I.G (ডি. জি. আই) থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৮০ সনের ৩১ মে ঢাকাস্থ নিজ বাসভবনে পরলোক গমন করেন।

 

৩।         আব্দুল্লাহেল বাকীঃ

 

আব্দুল্লাহেল বাকী টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার টেংগুরিয়া পাড়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- ছিলেন বিশিষ্ট ধর্মপ্রাণ মাওলানা আব্দুল গণি আনছারী, যিনি তৎকালীন সময়ে বিন্দুবাসিনী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের হেড মওলানা ছিলেন। আব্দুল্লাহেল বাকী করটিয়া সা’দত কলেজ হতে এইচ. এস. সি. ও ১৯৪২ সনে স্নাতক পাশ করার পর কাষ্টমস কর্মকর্তা হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি লায়ন্স ক্লাবের আজীবন সদস্য ছিলেন। ১৯৮৭ সনের ৮ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে পরলোক গমন করেন। তাঁর মৃত্যুর পরে সুযোগ্য সহধমির্ণী আমিনা বেগমের প্রচেষ্টায় স্বামীর স্মৃতিকে ধরে রাখার জন্য এবং এলাকার শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়  হাবলা টেংগুরিয়া পাড়া আব্দুল্লাহেল বাকী উচ্চ বিদ্যালয়।

 

৪।         আবু আহমেদ জমাদার

            ১৬-০৬-১৯৫৭ সনে কাশিল গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা-আলহাজ নূর হোসেন জমাদার। কাশিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে ১৯৭২ সনে করটিয়া এইচ,এম, ইনষ্টিটিউশন থেকে এস,এস,সি, পাশ করেন। ১৯৭৪ এবং ১৯৭৬ সনে করটিয়া সাদত কলেজ থেকে যথাক্রমে এইচ,এস,সি ও স্নাতক পাশ করেন। ১৯৭৯ সনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে মাষ্টার্সসহ এল,এল,বি পাশ করেন। দেশ প্রেমিক ও সচেতন ব্যক্তিত্ব  আবু আহমেদ জমাদার মহান মুক্তিযুদ্ধে কাদেরীয়া বাহিনীর সদস্য হিসাবে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৮৪ সনে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিচার) ক্যাডার-এ মুন্সেফ হিসাবে সর্ব প্রথম ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী থানায় যোগদান করেন। অতঃপর সাব জজ হিসাবে যশোর, যুগ্ম জেলা জজ হিসাবে ঢাকায় দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৫ সন পর্যন্ত তিনি জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পীকারের আইন কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় তিনি জার্মান পার্লামেন্টে (বুনডেষ্টাগ) পার্লামেন্টারী এফেয়ার্সের উপর  প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। সদালাপী, বিনম্র স্বভাবের আবু আহমেদ জমাদার ২০০১ সনে বি,সি,এস (বিচার) এসোসিয়েশনের মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। এডিশনাল সেশন জজ হিসাবে সিরাজগঞ্জে দায়িত্ব পালন শেষে বর্তমানে তিনি নওগাঁ জেলার অতিরিক্ত জেলা জজের দায়িত্ব পালন করছেন।

 

৫।         আব্দুর রহিম আহমেদ

            আব্দুর রহিম আহমেদ, জন্ম-১৩ ফেব্রুয়ারী ১৯৫৬ সন বাসাইল গ্রামে। পিতা- আলহাজ রবিউল্যা আহমেদ। তিনি ১৯৭২ সনে বাসাইল গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস,এস,সি করটিয়া সা’দত কলেজ থেকে এইচ এস সি, পরবর্তীতে ১৯৭৯ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসহ এম,এ পাশ করেন। কর্মসূত্রে তিনি বেশীরভাগ সময় পর্তুগালে থাকেন। তিনি ১৯৮৮-৮৯ সনে টাংগাইল জেলা সমবায় সমিতি এবং টাংগাইল জেলা সমবায় ইউনিয়নের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ইষ্টার্ন কো-অপারেটিভ ব্যাংকে নির্বাচিত পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী আব্দুর রহিম আহমেদ বর্তমানে বাসাইল শ্রমিক ফেডারেশন এবং বাসাইল বাসষ্ট্যান্ড বণিক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

 

৬।         আব্দুল কাদের ভূইয়া মিনজুঃ

আব্দুল কাদের ভূইয়া মিনজু ১৯২২ সনে রাজশাহীর সারদা ট্রেনিং সেন্টার নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- মরহুম আব্দুল খালেক ভূইয়া একজন সৎ পুলিশ অফিসার ও সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন। শৈশবে নিজ গ্রামে লেখাপড়ায় হাতে খড়ি। পরবর্তীতে করটিয়া হাফিজ মাহমুদ উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। একজন জনপ্রিয় ফুটবলার হিসেবে লেখাধুলার প্রতি প্রবল আগ্রহের কারণে পড়া শোনায় ছেদ পড়ে। বিশেষ একজন উদার মনের মানুষ হিসাবে এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অন্যান্য সমাজ সেবামূলক প্রতিষ্ঠানে তার অকৃপণ দানের হাত রয়েছে। এলাকার ছেলে মেয়েদের ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য নিজ গ্রাম কাশিলে প্রতিষ্ঠা করেন আঃ খালেক আঃ কাদের দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা। এলাকায় একটি মসজিদ নির্মাণে তার অবদান রয়েছে। নিজ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা এবং  সরকারীকরণে তার অবদান রয়েছে । কে. বি. এন উচ্চ বিদ্যালয়ে পরিচালনা পরিষদের দীর্ঘ দিন সভাপতির দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন এবং কাশিল হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও এতিম খানার অন্যতম সদস্য ছিলেন। কাশিল পল্লী উন্নয়ন সমতিরি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময় গ্রাম সরকার ছিলেন।

 

৭।         আব্দুল মালিক খোশনবীশঃ

বিংশ শতাব্দীর গোড়ার দিকে বাসাইলের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মঈন উদ্দিন খোশনবীশের সুশাসনে আব্দুল মালিক খোশনবীশ লেখাপড়ায় সুনাম লাভ করেন। লেখাপড়া শেষ করে পাকিস্তান আমলে তিনি মিলিটারিতে যোগদান করেন। কিন্তু এ চাকুরী ভাল না লাগায় চাকুরী ইস্তফা দিয়ে চলে আসেন। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সুদীর্ঘকাল চাকুরী করে ১৯৮৩ সনে অবসর গ্রহণ করেন। এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ার স্বপ্ন তাঁর বহুদিনের। এলাকায় হাজী মালিক মাজেদা হাইস্কুল সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নির্মাণে তাঁর সক্রিয় সহযোগিতা রয়েছে।

 

৮।         আব্দুল বারেক চৌধুরী (বুলবুল)

            ১লা  এপ্রিল, ১৯৫৩ সনে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সৈদামপুর গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । পিতা- আলহাজ আব্দুল খালেক চৌধুরী। সৈদামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষা জীবনের শুরু। ১৯৬৮ সনে মিরিকপুর গংগাচরণ তফশিলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস,এস,সি পাশ করেন। তারপর পড়াশোনা করেছেন জামুর্কী এম,এস,এ,জি হাই স্কুল এবং ময়মনসিংহ মৃত্যুঞ্জয়ী হাই স্কুলে। ১৯৭০ সনে আনন্দ মোহন কলেজ থেকে এইচ,এস,সি এবং ১৯৭২ সনে করটিয়া সাদত কলেজ থেকে স্নাতক পাশ করেন। কর্মজীবনে তিনি একজন ঠিকাদার। সৎ ব্যবসায়ী হিসাবে তাঁর পরিচিতি রয়েছে। শিক্ষানুরাগী, সমাজকর্মী আব্দুল বারেক চৌধুরী টাংগাইলস্থ সান ফ্লাওয়ার প্রিপারেটরী স্কুল এবং বাসাইল মিরিকপুর গংগাচরণ তফশিলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতির দায়িত্ব পালন করা ছাড়াও এলাকার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসাসহ এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন।

 

৯।         আব্দুস সালাম খান

 

১৯৩৭ সনে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার ঝনঝনিয়া গ্রামে জম্ম গ্রহণ করেন। পিতা মরহুম রিয়াজ উদ্দিন খান। শৈশবে নাগরপুরে লেখা পড়া শুরু। ১৯৫৪ সনে নাগরপুর যদুনাথ উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিকুলেশন, সা’দত কলেজ থেকে এইচ, এস, সি পাশ করার পর ভর্তি হন চট্রগাম কলেজে। পরবর্তীতে জগন্নাথ কলেজ হতে বি.কম পাশ করেন। সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম. এ ডিগ্রী লাভ করেই কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। ছাত্রাবস্থায় তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু। শ্রমিক আন্দোলনের তাঁর অবিস্মরণীয় অবদান রয়েছে। বাংলাদেশে গত ৪৫ বছরের মধ্যে শ্রমিক আন্দোলনে তিনি ছিলেন প্রতিশ্রুতিশীল নেতা। তিনি বর্তমানে জাতীয় শ্রমিক লীগের সভাপতি, বাংলাদেশ কনফেডারেশন অব ট্রেড ইউনিয়নের সভাপতি। এলাকার উন্নয়নের জন্য তাঁর অবদান প্রশংসার দাবিদার। শোষিত, বঞ্চিত, নির্যাতিত মানুষের কল্যাণে তাঁর চলার গতি সত্যিই প্রশংসনীয়।

 

১০।        আবদুস সালামঃ

আবদুস সালাম বাসাইল উপজেলার কাশিল ইউনিয়নের দাপনাজোড় গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা সৈয়দ আলী আহমেদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যায় হতে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে এম. এ.। পরবর্তীতে এম. এড. ডিগ্রী লাভ। ভাষা আন্দোলনে রাজ পথের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। তিনি ৫২’র ২১ ফেব্রুয়ারী থেকে পরবর্তী সাতদিন ছিলেন নিখোঁজ। তাকে শহীদ সালাম ভেবে গ্রামের বাড়িতে তার পিতা-মাতা কুলখানি করেছিলেন। ই. পি. সি. এস. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও সিভিল সার্ভিসে যোগ না দিয়ে শিক্ষকতা পেশা বেছে নিয়েছিলেন। প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজ পি. টি. আই-এর সুপারিনটেনডেন্ট হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন। চাকরি করেছেন, টাঙ্গাইল, রায়পুরা, ময়মনসিংহ ও জামালপুর। নাম গল্পাবলি গল্পশোনা ও কচিকাঁচাদের আসর নামক ছোটদের জন্য স্কুল পাঠ্য দুটি গল্পের বই বহুদিন পর্যন্ত পঞ্চম শ্রেণীর দ্রুত পঠন হিসাবে সিলেবাসে অন্তর্ভূক্ত ছিল। আজীবন সৎ প্রশাসক হিসাবে দক্ষ এই শিক্ষবিদ ১৯৮৮ সনের ২০ জানুয়ারী পূর্ব আদালত পাড়ার নিজ বাসভবনে মৃত্যু বরণ করেন।

 

১১।        আবুল ফজল মোঃ খলিলুর রহমান

 

১৯২৮  সনে ৩১ ডিসেম্বর টাঙ্গাইল জেলার বাশাইল উপজেলার সুন্না গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা-মরহুম আলহাজ্ব কাজেম উদ্দীন আহমেদ। শৈশবে লেখাপড়া শুরু হয় কুচবিহারের মাইনর স্কুলে। ১৯৪৪ সনে কুচবিহারের জেনকিন্স স্কুল হতে ম্যাট্রিকুলেশন। ১৯৪৬ সনে কুচবিহার ভিক্টোরিয়া কলেজ হতে আই. এ পাশ করেন। দেশ বিভক্তির কারণে লেখাপড়া সাময়িক বিঘ্ন ঘটলেও ১৯৫০ সনে সা’দত কলেজ করটিয়া হতে বি,এ পাশ করেন, ১৯৫৫ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম,এ ডিগ্রি লাভ করেন। এসময় সা’দত কলেজ করটিয়ার প্রখ্যাত প্রিন্সিপাল তোফায়েল আহমেদের আহবানে এ কলেজে তিনি বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৭২ সনে ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি নিযুক্ত হন এবং ১৯৮০ সন পর্যন্ত এ পদে বহাল ছিলেন। শিক্ষা সংস্কারে এবং শিক্ষক কল্যাণে তিনি ব্রতী ছিলেন। শিক্ষা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য তিনি জাতীয় শিক্ষা পদক- ২০০২ প্রাপ্ত হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন। বাংলা একাডেমি ও এশিয়াটিক সোসাইটির তিনি আজীবন সদস্য।

 

১২।        আলহাজ আব্দুল খালেক চৌধুরী

 ১৯২৮ সনে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের সৈদামপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা-আলহাজ কুদরত আলী চৌধুরী। বাল্য ও শৈশবে লেখা পড়া করেছেন টাংগাইল। টাংগাইল শিবনাথ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৪৩ সনে ম্যাট্রিক এবং ১৯৪৭ সনে করটিয়া সা’দত কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। দ্বিতীয় বিশ্ব-যুদ্ধের সময় ভারতের দাক্ষিণাত্বের আওরঙ্গবাদ ক্যান্টনমেন্টে এনটি (NT) ক্লার্ক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। বিশ্ব-যুদ্ধ শেষে ময়মনসিংহ কালেক্টরেটে যোগদান করেন। শিক্ষানুুুরাগী আলহাজ আব্দুল খালেক চৌধুরী দীর্ঘদিন কাঞ্চনপুর এলাহীয়া সিনিয়র মাদ্রাসা, মিরিকপুর গঙ্গাচরন তফসিলী উচ্চ বিদ্যালয়সহ স্থানীয় অনেক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত আছেন। একজন নীতিবান এবং শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি হিসাবে এলাকায় তাঁর পরিচিতি রয়েছে।

 

১৩।       আলহাজ্ব আবুল কালাম মোস্তফা (লাবু)

 

১৯৫৯ সনে ২৩ অক্টোবর টাঙ্গাইল শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা- আব্দুস সালাম ছিলেন উচ্চ পদস্থ  সরকারী কর্মকর্তা । শৈশবে টাঙ্গাইল শহরে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু। ১৯৭৭ সনে শিবনাথ উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস. এস. সি, ১৯৭৯ সনে ও ১৯৮২  সনে সা’দত কলেজ করটিয়া হতে যথাক্রমে এইচ. এস. সি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯৮৫ সনে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে এম. এ. ডিগ্রী লাভ করেন। বর্তমানে যৌথ উদ্যোগ নামে একটি এন. জি. ও. এর নির্বাহী পরিচালক এর দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। একজন ধর্মভীরু ও শিক্ষানূরাগী হিসাবে এলাকায় সাহায্য সহযোগিতা করে আসছেন। টাঙ্গাইল জেলায় ৪৪ টি ব্যবসায়িক সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত টাঙ্গাইল জেলা ব্যবসায়ি ঐক্যজোটের সাধারণ সম্পাদক তিনি।

 

১৪।        আসাদুল্লাহ চৌধুরীঃ

আসাদুল্লাহ চৌধুরী ১৯৩৪ সনের ৭ নভেম্বর বাসাইল উপজেলাধীন কাউলজানী গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতাঃ মরহুম আব্দুল বারী চৌধুরী। শৈশবে কাউলজানী জুনিয়র মাদ্রাসায় প্রাথমিক লেখা পড়া শুরু করেন। ১৯৫৩ সনে কাউলজানী নওশেরিয়া হাই স্কুল হতে মেট্রিকুলেশন পাশ করেন। ১৯৫৫ সনে সা’দত কলেজ করটিয়া হতে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। অতঃপর সিলেট সেটেলমেন্ট অফিসে চাকুরীর মাধ্যমে কর্ম জীবন শুরু করেন। কর্মরত অবস্থায় কারমাইকেল কলেজ হতে বি. এ. পাশ করেন। চাকুরী জীবন থেকে ১৯৬৭ সনে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৬৮ সনে দৈনিক পয়গাম পত্রিকায় লেখা লেখির মাধ্যমে আত্ম প্রকাশ করেন। সাপ্তাহিক ঝংকার, লোক কথা, খামোশ, মজলুমের কন্ঠস্বর, পূর্বাকাশ, টাঙ্গাইল সমাচার, মাসিক যমুনা, দৈনিক ইনকিলাব, দৈনিক মিল্লাদ ইত্যাদিতে তার লেখা নিয়মিত ভাবে প্রকাশিত হত। গুনহার, ঝংকার, বাংলার পতন, খালেদ ইবনে অলিদ প্রভৃতি তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ। ২৯ নভেম্বর ২০০৪ সনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

 

১৫।       আলহাজ মোহাম্মদ আব্দুল বছির

আলহাজ মোহাম্মদ আব্দুল বছির, জন্ম- ২রা মে, ১৯২২ সনে বাসাইল উপজেলার জশিহাটী গ্রামে। ঢাকা বোর্ডের অধীন হাই মাদ্রাসা পরীক্ষায় ১৯৩৯ সনে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ন হন। কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে করটিয়া কলেজ থেকে ১৯৪১ সনে আই,এ, ১৯৭৪ সনে বি,এ, পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আরবীতে ১৯৪৬ সনে এম,এ, অধ্যয়ন করেন। বি,টি,পাশ করার পর ১৯৬৪ সনে এম,এড, ডিগ্রী অর্জন করেন। বি,টি, পাশ করার পর দীর্ঘ ৪০ বছর বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী স্কুলের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তাঁর বহু লেখা প্রকাশিত হয়েছে। শিক্ষাবিদ লেখক ও সমাজ সেবী হিসাবে তাঁর ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। নিজ গ্রাম জশিহাটীতে একটি ফোরকানিয়া মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা এবং আইসড়া হাইস্কুল উন্নয়নে তাঁর অবদান রয়েছে।

 

১৬।       আহসান হাবীব মনসুরঃ

আহসান হাবীব মনসুর ১৯৫২ সনের নভেম্বর মাসে জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক নিবাস দাপনাজোর। পিতা মরহুম আব্দুর রাজ্জাক, মাতা মরহুমা নূর জাহান বেগম। নীলফামারী খঃ বালক উচ্চ বিদ্যালয় হতে স্ট্যান্ডধারী ছাত্র হিসেবে এস.এস.সি পাশ করেন। ঢাকা কলেজ হতে ১৯৬৯ সনে কৃতিত্বের সাথে এইচ.এস.সি পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্থনীতিতে বি.এ.অনার্স এম.এ প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু। কানাডার ম্যাক মাস্টার ইউনিভার্সিটি হতে এম.এস করার পর ম্যাক্রো ইকোনোমিক্স-এ পি.এইচ.ডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৮২ সনে ওয়েস্টার্ন ওন্টারিও বিশ্ববিদ্যালয় কানাডা হতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আই.এম.এফ) এর অর্থনীতিবিদ হিসাবে যোগদান করেন। বর্তমানে আই.এম.এফ-এর বিভাগীয় প্রধান হিসাবে কর্মরত আছেন। সরকারের আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে মূল্য সংযোজন করের প্রবর্তক হিসেবে প্রশংসা লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাকালে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বই প্রকাশ করেন । এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণে তার আর্থিক সহযোগিতা রয়েছে।

 

১৭।        ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রফিকুল আলম

            ১৩ ডিসেম্বর, ১৯৭৬ সনে কাশিল গ্রামের খামার বাড়ীতে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- মোঃ সামছুল আলম। ঢাকাস্থ শাহীন স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপ্ত করে মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে কৃতিত্বের সাথে ১৯৯৩ ও ১৯৯৫ সনে যথাক্রমে এস,এস,সি ও এইচ,এস,সি পাশ করেন। অতঃপর বাংলাদেশ ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিভার্সিটি (বুয়েট) থেকে ২০০১ সনে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন। তিনি প্রতিযোগিতামূলক বি,সি,এস পরীক্ষায় ২৪ ব্যাচে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন) ক্যাডারে নির্বাচিত হয়ে ১লা জুলাই, ১৯৯৫ সনে সহকারী কমিশনার ও ম্যাজিষ্ট্রেট হিসাবে ঠাকুরগাঁও কালেক্টরেটে যোগদান করেন। ভদ্র ও বিনয়ী ইঞ্জিনিয়ার মোঃ রফিকুল আলম সাগর ম্যাজিষ্ট্রেট হিসাবে যোগদানের পূর্বে জাপান গার্ডেন সিটি এবং গ্রামীণ ফোনে চাকুরী করেন।

 

১৮।       এ.কে.এম. আসাদুল হক তালুকদার

বাসাইল উপজেলার টেংগুরিয়া পাড়ায় ১৯৪৬ সনে জম্ম গ্রহণ করেন। পিতা আব্দুল কাইয়ুম তালুকদার। শৈশবে লেখাপড়া শুরু করেন মোমেনশাহী জেলা স্কুলে। পরবর্তীতে বিন্দুবাসিনী বালক বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিকুলেশন, সা’দত কলেজ করটিয়া হতে ইন্টারমিডিয়েট এবং ১৯৬৬ সনে বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে যন্ত্র কৌশল বিভাগ থেকে তিনি ১৯৭০ সনে বি.এস.সি (ইঞ্জিনিয়ারিং) ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি ঢাকাস্থ টাঙ্গাইল জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্বপক্ষে ছাত্র আন্দোলনে রয়েছে তাঁর বিশেষ অবদান। তিনি ১৯৭২ সনে বাংলাদেশ রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে যোগদান করে বিভিন্ন পদে চাকুরী করেন। ১৯৯২ সনে রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস থেকে উপ-সচিব হিসাবে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ে চলে আসেন। ২০০১ সনে এডিশনাল সেক্রেটারি পদোন্নতি লাভ করেন। ১লা এপ্রিল, ২০০৩ সনে চাকুরী শেষ করে বর্তমানে অবসর জীবন যাপন করছেন।

 

১৯।        এ. কে. এম মর্তুজ আলীঃ

এ. কে. এম মর্তুজ আলী দেউলীতে ১৯৩৮ সনে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মরহুম কালু সিকদার, মাতা মরহুমা নাছরিন বেওয়া। প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন গ্রামের পাঠশালা থেকে। করটিয়ার হাফিজ মাহমুদ ইনস্টিটিউট হতে সপ্তম শ্রেণী পাশ করেন। এরপর করটিয়া হাফিজ মাহমুদ ইসস্টিটিউটে দশম শ্রেণীতে ভর্তি হন এবং এখান হতেই ১৯৭০ সনে এস. এস. সি পাশ করেন। তিনি ১৯৭০-৭১ সেশনে সা’দত কলেজে আই. এ. ভর্তি হন। যখন তিনি আই. এ ক্লাসের ছাত্র তখন ১৯৭১ সনের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ গ্রহন করেন। কলেজ ক্যাম্পাসে তাঁকে যুদ্ধের ট্রেনিং দেয়া হয়। তিনি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর মুক্তিযুদ্ধ সংগঠনের একজন নির্ভীক মুক্তিযোদ্ধা সদস্য ছিলেন। যুদ্ধ বন্ধ থাকার জন্যে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী সাহেব ভারত অবস্থান নিলে তিনি ভারত চলে যান। তিনি ভারতের ১১ নং সেক্টরে ভর্তি হন এবং ভারত মহেন্দ্র ক্যাম্প হতে কামালপুরে যুদ্ধ করেন। তিনি ১৯৭১ সনের ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ভারত হতে ময়মনসিংহ আসেন এবং এখানে সেনাবাহিনীতে ১৬ বেঙ্গল রেজিমেন্টে ভর্তি হন। দীর্ঘ দুই বৎসর সেনাবাহিনীতে নিয়োজিত থাকার পর স্বেচ্ছায় চাকুরী পরিত্যাগ করে নিজ গ্রামে ফিরে আসেন। ১৯৮৭ সন হতে ২০০১ সন পর্যন্ত দেউলী খঃ নূরে আলম উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির একজন সম্মানিত সদস্য ছিলেন। তিনি দেউলী মধ্য পাড়া জামে মসজিদের সেক্রেটারি।

 

২০।       এম,এ মজিদ ভূইয়া

            ১৯৯৫ সনে বাসাইল উত্তরপাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা- মরহুম মোঃ জিয়ারত আলী। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে বাসাইল গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় হতে ১৯৫২ সনে প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ করেন। তিনিই সর্বপ্রথম  অত্র বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে পাশ করেন। তিনি করটিয়া সাদত কলেজ থেকে ১৯৫৪ সনে আই,এ এবং ১৯৫৬ সনে বি,এ পাশ করেন। অতঃপর করাচি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম,এ পাশ করেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা হিসাবে তাঁর চাকুরী জীবন শুরু। ১৯৮৩ সনে তিনি বি,সি,এস প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি অবসর জীবন যাপন করছেন।

 

২১।        এমদাদ আলী খান

 

তিনি ১৯২২ সনে টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। শিক্ষা জীবনে এমদাদ আলী খান গ্রাম্য পাঠশালায় লেখাপড়া শেষ করে ১৯৪৩ সনে করটিয়া হাফিজ মাহমুদ হাই মাদ্রাসা হতে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। যৌবনে অসীম সাহস ও উদ্দীপনায় উদ্দীপ্ত হয়ে ব্রিটিশ সেনা বাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি মিলিটারি হাবিলদার পদে চাকুরীকালীন অবস্থায় স্বীয় পেশায় যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেন। ১৯৪৭ সনে দেশ বিভাগের যুদ্ধে তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অবদান ছিল। যুদ্ধ শেষে ১৯৫১ সনে তিনি পুলিশ বিভাগের কর্মকর্তা পদে যোগদান করেন এবং ১৯৫৮ সনে চাকুরী জীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এই অবসর জীবনে তিনি রাজনীতি ও সমাজ সেবায় আত্মনিয়োগ করেন। ১৯৮৫ সনে তার অক্লান্ত শ্রমে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘‘এমদাদ হামিদা ডিগ্রী কলেজ, বাসাইল।’’ ১৯৬৬ সনে টাঙ্গাইলে আশেকপুরে গড়ে তোলেন জোবায়দা উচ্চ বিদ্যালয়। এছাড়াও এলাকার বিভিন্ন ধর্মীয়, শিক্ষা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে তার সহযোগিতা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবীদার। ধর্মপ্রাণ, ন্যায়নিষ্ঠ ও সদালাপী এই কীর্তিমান পুরুষ ৭ এপ্রিল ২০০০ সনে শুক্রবার টাঙ্গাইল নিজ বাসভবনে চির নিদ্রায় শায়িত হন।

 

২২।       এম. সিরাজুল হকঃ

 

এম. সিরাজুল হক, জন্ম বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামে, ১৯৪৪ সনের ২৫ ডিসেম্বর। পিতা -মরহুম এম. আফছার মিয়া। তিনি ১৯৬০ সনে আজাহার মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিকুলেশন ও সা’দত কলেজ হতে ১৯৬২ সনে আই. এস. সি. পাশ করেন। এরপর কায়দে আজম কলেজ হতে ১৯৬৫ সনে বি. এস. সি. ও ১৯৬৯ সনে করাচী বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাংলায় এম. এ. এবং করাচী বিশ্ববিদ্যালয় হতেই ১৯৭০ সনে এল. এল. বি. ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭৩ সনে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল হতে সনদ প্রাপ্ত হয়ে টাঙ্গাইল জেলা জজ কোর্টে যোগদান করেন। তিনি কায়দে আজম কলেজ ছাত্র সংসদ কার্যকরী পরিষদের সদস্য ১৯৬২-৬৯ সন), করাচীস্থ মোমেনশাহী কালচারাল সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক (১৯৬৬-৬৯ সন), টাঙ্গাইল জেলা এডভোকেট বারের ১৯৭৪ সনে সহ-সম্পাদক, ১৯৮০ সনে সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯২ সনে সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। ১৯৭৩ সনে সম্মেলনের মাধ্যমে ন্যাপ-এ যোগদান করেন। তৎপর টাঙ্গাইল শহর ন্যাপের ১৯৭৩- ১৯৭৯ সন পর্যন্ত সাধারণ সম্পাদক, ১৯৭৯ সনে জাতীয়তাবাদী ফ্রন্টে যুগ্ন আহবায়ক ও বি এন পির প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ন আহবায়ক পদে ছিলেন। তিনি সোনালী ব্যাংক, বাংলাদেশ হাউস বিল্ডিং ফাইনান্স কর্পোরেশন ও বাংলাদেশ  শিল্প ব্যাংক, ময়মনসিংহ জোন এর সাবেক উপদেষ্টা হিসেবে ছিলেন এবং বর্তমানে তিনি অগ্রণী ব্যাংক, টাঙ্গাইল এর আইন উপদেষ্টা। তিনি ১৯৮৬-৮৯ সন পর্যন্ত টাঙ্গাইল জেলা জজ কোর্ট এর পাবলিক প্রসিকিউটর হিসাবে ছিলেন।

 

২৩।       এডভোকেট আব্দুল বাকী মিয়াঃ

 

এডভোকেট আব্দুল বাকী মিয়া, পিতা-মরহুম ওয়াহেদ আলী মিয়া, মাতা মোছাঃ আফাতুন্নেছা। জন্ম- ১৯৫২ সন ৫ জানুয়ারী বাসাইলের জশিহাটী গ্রামে। তিনি ১৯৬৬ সনে এইচ. এম. ইনষ্টিটিউশন করটিয়া হতে এস. এস. সি. ১৯৬৮ সনে সা’দত কলেজ হতে এইচ. এস. সি ও ১৯৭০ সনে একই কলেজ হতে বি. এ. পাশ করেন। ১৯৭৭ সনে ঢাকা সিটি ‘ল’ কলেজ হতে এল. এল. বি সমাপ্ত করেন। তৎপর ১৯৭৮ সনে আইনজীবি হিসেবে সনদ প্রাপ্ত হন। তিনি ছাত্রাবস্থা থেকেই রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৬৯ সনে ছাত্র ইউনিয়নের প্রার্থী হিসাবে সা’দত কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জাতীয় সমাজতান্তিক দলে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি টাঙ্গাইল জেলা বি. এন. পি ও বাসাইল থানা বি. এন. পি’র সদস্য। তিনি ১৯৮০ সনে টাঙ্গাইল জেলা এডভোকেট বার সমিতির সহ সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯১ সনে সাধারণ সম্পাদক, ১৯৯৭ সনে সহ- সভাপতি এবং ১৯৯৯-২০০০ সনে সভাপতি পদে নির্বাচিত হন। তিনি রেডক্রিসেন্ট ও ডায়াবেটিক এসোসিয়েশনের আজীবন সদস্য ও জেলা শিল্পকলা একাডেমির সদস্য। তিনি ৬ষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাসাইল- সখীপুর আসন থেকে বি. এন. পি’র মনোনয়ন প্রার্থী ছিলেন।

 

২৪।       এডভোকেট আহমেদ আযম খান

 

 

বাসাইল উপজেলার বাসাইল সদরে ১৯৫৭ সনে ১৪ জানুয়ারী জন্ম  গ্রহণ করেন। পিতা হাবিবুর রহমান খান। শৈশবে তিনি গ্রামের পাঠশালায় লেখাপড়া শেষ করে এইচ. এম. ইনষ্টিটিউশন হতে ১৯৭২ সনে এস, এস, সি পাশ করেন। করটিয়া সা’দত কলেজ হতে ১৯৭৪ সনে এইচ. এস. সি. পাশ করেন। জনাব আহমেদ আযম খান ছাত্রজীবন থেকেই সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। রাজনৈতিক রোষাণলে ১৯৭৪-৭৫ সনে কারাবরণ করেন। কারামুক্তির পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১৯৭৮ সনে বি.এস.এস (সম্মান) এবং ১৯৭৯ সনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী শেষ করে ঢাক ‘ল’ কলেজ হতে আইন পাশ করে কর্মজীবন শুরু করেন। বর্তমানে তিনি বি. এন. পি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য। উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি। এলাকার বিভিন্ন ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন কাজে তাঁর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতা রয়েছে। ২০০১ সনে চারদলীয়  ঐক্য জোটের প্রার্থী হিসাবে বাসাইল-সখিপুর আসনে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করেন।

 

২৫।       এডভোকেট ফাইজুর রহমানঃ

এডভোকেট ফাইজুর রহমান ১৯৫২ সনে বাসাইল উপজেলা শহরস্থ বাসাইল গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা-মোঃ ছায়েদ আলী মিয়া, রাজশাহী বিভাগ ফ্রি প্রাইমারি স্কুল হতে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন। ১৯৭০ সনে বাসাইল গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস. এস. সি. মানবিক শাখায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন এবং ১৯৭২ সনে সা’দত কলেজ হতে এইচ. এস. সি পাশ করেন। ১৯৭৯ সনে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে অনার্সসহ ১৯৮০ সনে মাষ্টার্স ও এল. এল. বি. ডিগ্রী লাভ করেন। ছাত্রাবস্থায় তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ১৯৭২ সনে থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ১৯৭৪ সনে থানা ছাত্রলীগের সভাপতির পদ অলংকৃত করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় পড়াকালীন জসীম উদ্দীন হল শাখায় সভাপতির পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং ভি. পি. পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ১৯৮৪ সনে বাসাইল থানা এডঃ বার সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তৎপর বাসাইল থানা বি. এন. পি’র আহবায়ক পদে ছিলেন এবং বর্তমানে তিনি জেলা বি.এন.পি ও টাঙ্গাইল জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক, টাঙ্গাইল জেলা এডঃ বার সমিতির সাধারণ সম্পাদক, বাসাইল এমদাদ হামিদা ডিগ্রী মহাবিদ্যালয়ে পর পর ৩ বার গর্ভনিং বডির সদস্য, ১৯৮৩ সনে বাসাইল থানা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন।

 

২৬।       এডভোকেট বজলুর রহমানঃ

বজলুর রহমান, জন্ম ৯ মে ১৯৫৪ সনে বাসাইল উপজেলার বাসাইল সদরে। পিতা আঃ রশিদ মিয়া, মাতা লাইলী বেগম। ১৯৭০ সনে বাসাইল গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস. এস. সি. ১৯৭২ সনে সা’দত কলেজ করটিয়া হতে এইচ. এস. সি. ১৯৭৫ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বি. এস. এস. অনার্স সহ রাষ্ট্র বিজ্ঞানে ১৯৭৬ সনে এম. এস. সি. ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭৭ সনে ঢাকা সিটি সেন্ট্রাল ‘ল’ কলেজ হতে আইন বিষয়ে এল. এল. বি ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭৮ সনে নবীনগরের ব্রাহ্মনবাড়ীয়া কলেজে অধ্যাপনার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু। বাসাইল উপজেলার এমদাদ হামিদা ডিগ্রী কলেজে বেশ কিছুদিন দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৮৩ সনে টাঙ্গাইল জেলা এডভোকেট বারে যোগদান করেন এবং ২০০২ সন হতে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এ. পি. পি) হিসেবে অদ্যাবধি নিয়োজিত আছেন। বর্তমানে বাসাইল থানা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের কার্যকরী কমিটির সম্মানিত সভাপতি।

 

 

২৭।       এস, আর খোশনবীশঃ

এস, আর খোশনবীশ, জন্ম ১৯৪৫ সনের ২৬ ফেব্রুয়ারি বাসাইল উপজেলার বাঘিল গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। পিতা মরহুম আব্দুল মালেক খোশনবীশ। শৈশবে গ্রামের পাঠশালায় লেখাপড়া শুরু। পরবর্তীতে বাসাইল গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস. এস. সি. পাশ করার পর ভর্তি হন সা’দত কলেজ করটিয়াতে ইন্টারমিডিয়েটে। বাংলাদেশ পুলিশ বাননীতে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন ১৯৬৫ সনে রাজশাহীতে। ১৯৬৭-৬৮ শিক্ষাবর্ষে রংপুর পি, টি, আই, হতে কৃতিত্বের সহিত ১ম শ্রেণীতে সি, ইন, এড প্রশিক্ষণ লাভ করেন এবং রংপুর কলেজ হতে প্রাইভেট পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে আই, এ পাশ করেন। ঢাকায় রাজার বাগ পুলিশ লাইন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে বদলী হয়ে আসেন এবং তার উদ্যোগের কারণেই বিদ্যালয়টি উচ্চ বিদ্যালয়ে রূপ নেয় যা বর্তমানে রাজার বাগ পুলিশ লাইন স্কুল এন্ড কলেজ নামে সুপ্রতিষ্ঠিত। ১৯৯৭ সনের ১ আগষ্ট স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। তিনি দীর্ঘ ২৫ বছর যাবৎ বাঘিল জামে মসজিদ এর সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তিনি বাঘিল ফুলবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কবর স্থান নির্মাণ ও সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে রেখে যাচ্ছেন বিশেষ অবদান।

 

২৮।       কাজী শহীদুল ইসলাম

 

            কাজী শহীদুল ইসলাম, জন্ম ৫ আগষ্ট, ১৯৭১ সনে কাশিল গ্রামে। পিতা- আলহাজ মোঃ শাহজাহান মিয়া। শৈশবে কাশিল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার হাতেখড়ি। তারপর সন্তোষ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে হেফজ শাখায় পড়াশোনা করেন। ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সনে করটিয়া রোকেয়া সিনিয়র মাদ্রাসা থেকে যথাক্রমে দাখিল ও আলিম পাশ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক ষ্টাডিজ শাখায় ভর্তি হয়ে কিছুদিন পড়াশোনা করেন। কিন্তু পড়াশোনা শেষ না করে ১৯৯০ সনে শ্রীবর্দী ফাজিল মাদ্রাসা থেকে ফাজিল এবং টাংগাইল আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ১৯৯৫ সনে কামিল পাশ করেন। এরপর কিছুদিন করটিয়া সাদত কলেজে পড়াশোনা করেন। এ সময় তিনি কলেজ ছাত্র সংসদের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক নির্বাচিত হন। অতঃপর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক ষ্টাডিজ বিভাগে প্রাইভেট পরীক্ষা দিয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। বর্তমানে কে,বি,এন উচ্চ বিদ্যালয়ে ধর্ম শিক্ষক পদে কর্মরত আছেন। শিক্ষকতার পাশাপাশি কাশিল ইউনিয়নের কাজী হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনীতি সচেতন জনাব কাজী শহীদুল ইসলাম বর্তমানে বাসাইল উপজেলা বি,এন,পি’র সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। কাশিল হাফেজিয়া মাদ্রাসার সম্পাদকের দায়িত্ব পালনসহ তিনি এলাকার বিভিন্ন ধর্মীয় ও সমাজ কল্যাণমূলক কর্মকান্ডে জড়িত আছেন।

 

২৯।       খিজির হায়াত খানঃ

খিজির হায়াত খান টাঙ্গাইল জেলার বাসাইলে ১৯৬৭ সনে জন্মগ্রহণ করেন। পৈতৃক নিবাস বাসাইল উপজেলার ফুলকী ইউনিয়নের ঝনঝনিয়া গ্রাম। পিতাঃ শহীদ রওশন আলী খান, মাতা মরহুমা হাজেরা খান। পৈতৃক চাকুরীর সুবাদে শৈশবে চিটাগাং এ লেখাপড়া শুরু করেন। ১৯৮৩ সনে স্বামী বিবেকানন্দ উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস. এস. সি. পাশ করে সা’দত কলেজ করটিয়া হতে ইন্টারমিডিয়েট ও ডিগ্রী পাশ করেন। স্বল্পকাল ব্যবসা বাণিজ্যে অতিবাহিত হবার পর নিউইয়র্কে গমন করেন। পিতৃ নামে প্রতিষ্ঠিত শহীদ রওশন আলী খান মহাবিদ্যালয়কে আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলাই তাঁর সংগ্রামের মূল লক্ষ্য।

 

৩০।       খান আব্দুল কাইয়ুমঃ

খান আব্দুল কাইয়ুম খান টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার কাউলজানী গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১ জানুয়ারি ১৯৫৯ সনে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম হাজী মোহাম্মদ হোসেন খান (গিনি মিয়া) এবং মাতা মোসাম্মৎ সাব বেগম। শৈশবে টাঙ্গাইল শহরে লেখা পড়া শুরু। ১৯৭৪ সনে বিন্দুবাসিনী বালক উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস. এস. সি. পাশ করে ঢাকা কলেজ হতে ১৯৭৬ সনে এইচ. এস. সি. পাশ করেন। ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। জাতীয় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এবং টাঙ্গাইল জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক। বৃহত্তর ছয় আনী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সুদীর্ঘ দিন। তিনি নগর জলফৈ দাখিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং কাউলজানী কলেজের দাতা সদস্য। এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে তার প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতা রয়েছে।

 

৩১।       খন্দকার জাহাঙ্গীরুল ইসলামঃ

খন্দকার জাহাঙ্গীরুল ইসলাম, জন্ম  ১৯৫২ সনের ৩০ জুন বাসাইল উপজেলার জশিহাটী গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। পিতা খন্দকার ওয়াজেদ আলী ছিলেন আদর্শবান স্কুল শিক্ষক, মাতা মিসেস সালমা খানম। শৈশবে জশিহাটী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে বাল্য শিক্ষা লাভের পর গোপাল দীঘি কে. পি. ইউনিয়ন হাইস্কুল (কালিহাতী) হতে ১৯৬৭ সনে এস. এস. সি. পাশ করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৯ সনে সা’দত কলেজ করটিয়া হতে এইচ. এস. সি. পাশ করে ভর্তি হন একই কলেজে, বি. এস. সিতে। ৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে স্বেচ্ছা সেবক বাহিনীর সদস্য হিসেবে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ১৯৭২ সনে সা’দত কলেজ করটিয়া হতে বি. এস. সি. পাশ করেন এবং ঢাকা ‘ল’ কলেজ হতে এল. এল. বি. ডিগ্রী লাভ করেন। বি, এস. সি. পাশের পর ১৯৭৫ সনে টাঙ্গাইল কালেক্টরেট অফিস সহকারী হিসাবে কর্ম জীবন শুরু করেন। এলাকার উন্নয়নে ও সমাজ সেবায় রয়েছে তার বিশেষ অবদান।

 

৩২।       খন্দকার মোঃ আইয়ুব ঃ

খন্দকার মোঃ আইয়ুব, পিতা মরহুম খন্দকার মোতাহের আলী ও মাতা আমেনা খাতুন। জন্ম ১৯৫২ সনের ৩০ ডিসেম্বর বাসাইল উপজেলার জশিহাটী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। জশিহাটী হতে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করার পর ১৯৬৮ সনে কোয়েদী সোনাউল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি পাশ করেন। ১৯৬৯ সনে পুলিশ একাডেমি সারদা হতে ৬ মাস প্রশিক্ষণ লাভ করেন এবং ১৯৭০ সনে বরিশাল সদর উপজেলায় পুলিশ কনস্টেবল হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৭১ এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে স্বেচ্ছা সেবক হিসেবে স্বল্পকালীন দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সন হতে ২০০১ সন পর্যন্ত একই পদে শরিয়তপুর জেলার বিভিন্ন ইউনিটে  দায়িত্ব পালন ও ২০০৩ সনের জুলাই মাসে অবসর গ্রহণ  করেন।

 

৩৩।      খন্দকার রফিকুল ইসলামঃ

খন্দকার রফিকুল ইসলাম টাঙ্গাইল জেলাধীন বাসাইল উপজেলার ফুলকী ইউনিয়নের জশহাটী গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৫৬ সনের ৩১ জানুয়ারী জন্মগ্রহণ করেন। পিতা খন্দকার ওয়াজেদ আলী এবং মাতা মিসেস সালমা খানম। পিতা- মাতার ৮ ছেলে ও ১ মেয়ের মধ্যে খন্দকার রফিকুল ইসলাম কনিষ্ঠ সন্তান। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী, অধ্যবসায়ী, বিনয়ী, নম্র স্বভাবের খন্দকার রফিকুল ইসলাম জশিহাটী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। এস.এস.সি পরীক্ষার জন্য প্রস্ত্ততি গ্রহণকালে ১৯৭১ সনে শুরু হয় স্বাধীনতা যুদ্ধ। তিনি স্বাধীনতাযুদ্ধে  সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সনে এস.এস.সি. ১৯৭৩ সনে এইচ.এস.সি এবং ১৯৭৬ সনে সা’দত কলেজ থেকে অর্থনীতিতে অনার্স সহ বি.এস.এস পরীক্ষায় কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে ১৯৭৮ সনে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড নামে খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয থেকে অর্থনীতিতে মাস্টার্স এম.এস.এস ডিগ্রী লাভ করে। ১৯৮৫ সনে বি.সি.এস পরীক্ষায় পাশ করে বি.সি.এস (প্রশাসন) ক্যাডারে যোগদান করেন। খন্দকার রফিকুল ইসলাম বাসাইল উপজেলার জশিহাটী নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং জশিহাটী খন্দকার ওয়াজেদ আলী মাদ্রাসা ও এতিমখানার প্রতিষ্ঠাতা। এছাড়াও তিনি ঢাকা জেলার ডেমরা থানার সুন্না টেংরা ছালামিয়া দাখিল মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা সদস্য।

 

৩৪।       জমির উদ্দিনঃ

আলহাজ্ব জমির উদ্দিন বি. এল। তিনি ১৯০১ সনে বাসাইল উপজেলার সিঙ্গারডাক গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মরহুম সলিমুদ্দিন সরকার। তিনি জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজ হতে আই. এ ও বি. এ. পাশ করে কলকাতা হতে আইনে ডিগ্রী নিয়ে বঙ্গদেশে চলে এসে টাঙ্গাইল মুন্সেফ কোর্টে আইন পেশার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। কলকাতায় লেখা পড়া করার সময় থেকেই জমির উদ্দিন রাজনৈতিক সক্রিয় কর্মী হিসাবে কাজ করেন। এ সময় থেকে প্রখ্যাত রাজনৈতিক নেতা শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক. মাওলানা ভাসনী, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর সান্নিধ্য লাভ করেন। দেশ বিভক্তির পর পূর্ব পাকিস্তানের এম. এল. এ. নির্বাচিত হন। তার উল্লেখযোগ্য কীর্তি পাথরঘাটা উচ্চ বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন মাদ্রাসা মসজিদ এমনকি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ছাড়াও সাহিত্য সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। ১৯৬৯ সনের ২০ জুলাই এই মহান ব্যক্তিত্ব পরলোক গমণ করেন।

 

৩৫।       জামরুল হাসান বেগঃ

জামরুল হাসান বেগ ১৯৫৮ সনে বাসাইল উপজেলার বিয়ালা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম ইলিম বেগ ও মাতা হাজেরা খানম। শৈশবে নাকাছিম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করার পর ১৯৮৩ সনে কে. বি. এন. বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় হতে চারটি লেটার সহ এস. এস. সি. পাশ করেন। ১৯৮৫ সনে আউলিয়াবাদ আলাউদ্দিন সিদ্দিকী আবাসিক কলেজ হতে ১ম বিভাগে এইচ.এস. সি. পাশ করেন। ১৯৯০ সনে ঢাকা বিশ্বাবদ্যালয় হতে বাংলাতে ১ম শ্রেণীতে ২য় স্থান অধিকার করে বি. এ. সম্মান পাশ করেন। ১৯৯২ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতেই এম. এ. ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৯৩ সনে আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউট ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে যোগদান করেন। ১৯৯৫-৯৬ সনে উক্ত বিভাগের (বাংলা) সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সনে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ১৯৯৩ সনে তার সাহিত্য চিন্তা প্রবন্ধ গ্রন্থ প্রকাশিত হয়। ১৯৯৮ সনে নজরুল ইসলাম ও অন্যেরা নামক প্রবন্ধ গ্রন্থ বাংলা একাডেমি কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পত্রিকায় তার তেরটি প্রবন্ধ প্রকাশ পেয়েছে। এছাড়া পত্র পত্রিকায় তার অনেক লেখা প্রকাশিত হয়েছে। এই ক্ষণজন্মা ব্যক্তিটি মাত্র একত্রিশ বছর বয়সে ১৯৯৯ সনে ২ জানুয়ারি মৃত্যু বরণ করেন।

 

৩৬।       ডঃ নজরুল ইসলামঃ

 

২৭ মার্চ ১৯৫০ সনে পৈত্রিক নিবাস টাঙ্গাইলের হাবলা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা- শাহেদ আলী একজন আদর্শ ব্যক্তি ছিলেন। নিজ গ্রাম হাবলাতেই প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। করটিয়া সা’দত কলেজ হতে আই. এস. সি পাশ করে ১৯৭২ সনে ফসল বিদ্যা বিভাগে বি. এস. সি. (এজি সম্মান) এবং ১৯৭৪ সনে কেঠলিতত্ব ও উদ্ভিদ প্রজনন বিভাগে এম. এস. সি. (এ জি) ডিগ্রী লাভ করেন। ডঃ নজরুল ইসলাম ১৯৭৩ সনে ২৭ মার্চ বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন এ মহকুমা ব্যবস্থাপক হিসাবে চাকুরীতে যোগদান করেন। তারপর ১৯৭৪ সনে ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউশন এ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। তিনি ১৯৭৫ সনে ফিলিপাইনস-এ অবস্থিত আর্ন্তজাতিক ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউট থেকে সি. এ. টি. পি. ট্রেনিং গ্রহণ করেন। ১৯৮০ সনে সেস ব্যানোজহিত ফিলিপাইনস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম. এস. ও ১৯৮৮ সনে পি. এইচ. ডি ডিগ্রী লাভ করেন। দেশ বিদেশের বহু স্থানে তার গবেষণা লব্ধ অনেক প্রবন্ধ ও প্রকাশনা রয়েছে। ডঃ নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনষ্টিটিউটে এ. আর. এফ. এ বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৯৬ সনে তিনি ইনষ্টিটিউট অব পোষ্ট গ্রাজুয়েট ষ্টাডিস ইন এগ্রিকালচার, গাজীপুরে এপ্রিলমি ডিপার্টমেন্টে প্রফেসর এবং বিভাগীয় প্রধান হিসাবে নিযুক্ত হন মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি এই পেশাতেই নিয়োজিত ছিলেন।

 

 

৩৭।       ডঃ মালিক খসরু চৌধুরীঃ

 

জন্মস্থান বাসাইল উপজেলার কাউলজানী গ্রামের চৌধুরী পরিবারে। পিতা মরহুম মমতাজ উদ্দিন চৌধুরী। শৈশবে কাউলজানী হাই মাদ্রাসা হতে ১ম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে ভর্তি হন কলকাতা ইউনিভার্সিটিতে এবং ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। দেশ বিভাগের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বি. এ অনার্স পাশ করার পর ক্যামব্রিজ বিশ্ব বিদ্যালয় হতে অর্থনীতিতে এম. এ ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তীতে ম্যানচেষ্টার বিশ্ববিদ্যালয় হতে পি. এইচ. ডি. ডিগ্রী লাভ করেন। শিক্ষানুরাগী ডঃ মালিক খসরু চৌধূরী শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৬৯ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে যোগদান করেন। এরপর জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় এর ডিন হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সনে আমেরিকার প্রখ্যাত কানেকটিকাট স্টেটের বিশ্ব বিখ্যাত YALE ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করেন। নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব শেষে পুনরায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেন। তিনি সক্রিয় ভাবে ESCAP এর সাথে জড়িত ছিলেন। অসাধারণ প্রতিভাধর এই ব্যক্তি প্রথমে ইন্দোনেশিয়াতে (RESEARCH)  এবং পরবর্তীতে ব্যাংককে রিসার্চ এর কাজ করেন। তিনি বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রধান উপদেষ্টা, কাউলজানী নওশেরীয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সাথে দীর্ঘদিন জড়িত ছিলেন। তিনি সখিপুরের হতেয়া ডিগ্রী কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত তিনি বিভিন্ন সমাজ কল্যাণমূলক কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন।

 

৩৮।       ডঃ মোঃ সাঈদুল ইসলাম খান

            বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামে ১৯৪২ সনের ১২ জানুয়ারী জন্মগ্রহণ করেন। পিতা-মরহুম নূরুল ইসলাম খান। টাংগাইল শহরে ছেলে বেলা কেটেছে তাঁর। টাংগাইল টাউন প্রাইমারী স্কুলে শিক্ষার হাতে খড়ি। ১৯৫৭ সনে বিন্দুবাসিনী বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক এবং ১৯৫৯ সনে ঢাকা কলেজ থেকে এইচ, এস, সি, পাশ করেন। ১৯৬৩ সনে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এ বি, এস, সি, পাশ করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন। পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (এস, ডি, ই) হিসাবে কর্মজীবনের শুরু। ১৯৬৩ সন থেকে ১৯৭০ সন পর্যন্ত এ দায়িত্বে ছিলেন তিনি। ১৯৭০ থেকে ১৯৮০ সন পর্যন্ত রাজশাহী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অধ্যাপনা করেন। ১৯৮০ থেকে ১৯৮৮ সন পর্যন্ত জাপানী পরামর্শক সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দায়িত্বে ছিলেন। জাতিসংঘের পরিবেশ বিশেষজ্ঞ হিসাবে এবং কিছুদিন এ,ডি,সি,এ, জাপানে ট্রেইনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৩ সনে গ্রাম বাংলা সংস্থা নামে একটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে গ্রাম অঞ্চলের পিছিয়ে পড়া মানুষদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন। এ সময় কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন এরিয়াকে মডেল হিসাবে ধরা হয়। বর্তমানে তিনি বুয়েট, জাহাঙ্গীরনগর ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিজিটিং প্রফেসর হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ঢাকাস্থ টাংগাইল জেলা সমিতির সভাপতি, জাপান ইউনিভার্সিটি এলামনাই সমিতির এ্যাডভাইজারী কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, নাগোয়া ইউনিভার্সিটি এলামনাই কাউন্সিলের বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের চেয়ারপার্সন, আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান, কমপ্রিহেন্সিভ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান, গ্রাম বাংলা সংস্থার চেয়ারম্যানের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাথে জড়িত থেকে এলাকার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করছেন। আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন এই ব্যক্তিত্ব স্থানীয়ভাবে প্রফেসর এস, আই, খান নামে ব্যাপক পরিচিত।

 

৩৯।       ডাঃ এম.এ. সামাদ

 

১৯৫৮ সনে ১৫ জুন বাসাইল উপজেলার দেউলী গ্রামে নানার বাড়ীতে জম্ম গ্রহণ করেন। তার শৈশব কাটে সখীপুরের হাতীবান্ধা গ্রামে ও বাপ-দাদার বাড়ী বাসাইল থানার কাঞ্চনপুর ঢংপাড়া গ্রামে। পিতা-মরহুম তোফাজ্জল হোসেন। গ্রাম্য পাঠশালায় বাল্য শিক্ষা লাভের পর জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয় হতে ১৯৭৩ সনে প্রথম বিভাগে এস. এস. সি এবং ১৯৭৫  সনে সরকারী তিতুমীর কলেজ, ঢাকা হতে প্রথম বিভাগে এইচ. এস. সি. পাশ করেন। তিনি ১৯৮২  সনে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হতে এম. বি. বি. এস পাশ করেন এবং সরকারী চাকুরীতে যোগদান করেন। তিনি চাকুরীতে থাকা অবস্থায় চিকিৎসা, শিক্ষা ও গবেষণার প্রতি মনোনিবেশ করেন। ১৯৯৪ সনে মেডিসিন বিষয়ে এফ.সি.পি.এস. ডিগ্রী লাভ করেন এবং ১৯৯৭ সনে নেফ্রোলজি (কিডনী রোগ) বিষয়ে ডক্টর অব মেডিসিন (এম.ডি) ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৮২ সনে সরকারী চাকুরীতে যোগদানের পর হতে বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ ও তদানীন্তন আই পি জি এম আর- এ (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে) চিকিৎসা, শিক্ষকতা ও গবেষণায় নিবেদিত ছিলেন। বর্তমানে জাতীয় কিডনী ও ইউরোলজি হাসপাতাল, শের-ই বাংলা নগর ঢাকা এর নেফ্রোলজি বিভাগের একজন অধ্যাপক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

 

 

৪০।       ডাঃ নাজির আহমেদ চৌধুরী (রনজু)ঃ

 

টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার কাউলজানী গ্রামে ১৯৫৬ সনে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- মরহুম আব্দুল বারী চৌধুরী। শৈশবে গ্রামে লেখাপড়া শুরু। জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয় হতে ১৯৭২ সনে প্রথম বিভাগে এস. এস. সি. পাশ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে রয়েছে তাঁর অবদান। সা’দত কলেজ করটিয়ায় কিছুদিন অধ্যয়নের পর ঢাকা আইডিয়াল কলেজ হতে ১ম বিভাগে এইচ. এস. সি. পাশ করেন ১৯৭৫ সনে । ১৯৭৭ সনে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। ১৯৮৩ সনে এম, বি. বি.এস. স্বাস্থ্য ক্যাডার উত্তীর্ণ হয়ে বাসাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক হিসাবে যোগ দেন। ১৯৮৪ সনে ঢাকা হৃদরোগ ইনষ্টিটিটিউটে যোগদান করেন। বর্তমানে সহযোগী অধ্যাপক (কার্ডিওলজজী) পদে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ ও মিটফোর্ড হাসপাতালে কর্মরত আছেন।

 

৪১।     ডাঃ মোঃ শাহজাদা চৌধুরী

 

১৯৪৫ সনে ২৮ ফেব্রুয়ারী, টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার কাউলজানী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম মোজাফফর আলী চৌধুরী। তিনি মাতা-পিতার সর্বকনিষ্ঠ সন্তান। অধ্যাপক চৌধুরী বাল্যকালে পন্ডিত এমদাদুল হকের নিকট হাতেখড়ি নেন। ১৯৬০ সনে কাউলজানী নওশেরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিক এবং ১৯৬৩ সনে করটিয়া সা’দত কলেজ হতে আই,এস,সি পাশ করেন। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হতে ১৯৭২ সনে এম,বি,বি,এস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ডিপিএইচ এবং ১৯৮২ সনে যুক্তরাজ্যের লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম,এস,সি ডিগ্রী লাভ করেন। ছাত্রজীবনে আন্তঃ মেডিক্যাল ছাত্রলীগের সুদক্ষ সংগঠক, ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তাঁর গবেষণালব্ধ উদ্ভাবিত কার্যক্রমে রোগ-প্রতিরোধ, ম্যালেরিয়া-কালাজ্বর ও ফাইলেরিয়া রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসায় এক নবদিগন্তের সূচনা করে এবং ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সিজিএন মেসিটেলারের তত্ত্বাবধানে গবেষণার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডক্টরেট অব ফিলোসফি (পি,এইচ,ডি) ডিগ্রী প্রদান করেন।

 

৪২।       তোফায়েল আহমেদ

            ১৭ মে, ১৯৭০ সনে কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ছনকাপাড়া গ্রামে  জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- মৃত আঃ লতিফ  আহমেদ। বাসাইল মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু। তারপর ১৯৮৬ সনে বাসাইল গোবিন্দ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস,এস,সি পাশ করেন। ১৯৮৮ ও ১৯৯১ সনে মির্জাপুর কলেজ থেকে এইচ,এস,সি ও স্নাতক পাস করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। মেধাবী ছাত্র তোফায়েল আহমেদ ২৪ তম বিসিএস পরীক্ষায় বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারে সহকারী পুলিশ সুপার পদে নির্বাচিত হন। অতঃপর ০২-০৭-২০০৫ তারিখে খুলনা পঞ্চম এপিবিএনএ- যোগদান করেন। স্বল্পভাষী ও বিনম্র স্বভাবের তোফায়েল আহমেদ বর্তমানে প্রশিক্ষণে রয়েছেন।

 

৪৩।       দেওয়ান আবদুস সুলতানঃ

দেওয়ান আবদুস সুলতান ইংরেজী ১৯৫৪ সালের ৩০ শে সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল জেলার বাশাইল থানাধীন জশিহাটী গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে  জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম দেওয়ান আনোয়ার হোসেন এলাকায় সবার নিকট পরিচিত ব্যক্তিত্ত্ব। নিজ গ্রামের মডেল প্রাইমারি স্কুলে ৫ম শ্রেনী শেষ করার পর আইসরা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ঐ স্কুলের খ্যাতনামা শিক্ষক বাবু বিশ্বনাথ চক্রবর্ত্তীর অক্লান্ত প্রচেষ্টায় তিনি ১৯৬৬ সনে জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় ১ম গ্রেডে বৃত্তি লাভ করেন। ১৯৬৯ সনে এস.এস.সি. পরীক্ষায় মানবিক বিভাগ হতে লেটার সহ ১ম বিভাগে উর্ত্তীণ হন। ১৯৭১ সনে তিনি সা’দত কলেজ -এর বিজ্ঞান বিভাগ হতেও ১ম বিভাগে এইচ.এস.সি পরীক্ষায় পাশ করেন। সা’দত কলেজে ১৯৭৪ সনে অর্থনীতিতে অনার্স পাশ করে তিনি ১৯৭৫ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্থনীতিতে এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন। স্কুল জীবনে তিনি সকল শ্রেণীতেই ১ম ছিলেন। ছাত্র জীবনে তিনি বিভিন্ন ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৭১ সনে স্বাধীনতা যুদ্ধে নিজস্ব এলাকায় সেচ্ছাসেবকের দায়িত্ব পালন করেন। চাকুরী জীবনের শুরুতে তিনি কলেজে অর্থনীতির প্রভাষক হিসাবে যোগ দেন। ঢাকা জিলার জুরাইন আদর্শ মহাবিদ্যালয়ে ১৯৭৭ সনে যোগদান করেন। ১৯৭৯ সালের নভেম্বর মাসে তিনি বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকে প্রবেশনারী অফিসার হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৮১ সনে কৃষি ব্যাংকের চাকুরী হতে ইস্তফা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে ১ম শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসাবে যোগদেন। বাংলাদেশ ব্যাংক ট্রেনিং একাডেমীসহ তিনি ব্যাংকের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে কাজ করেছেন। 

 

৪৪।       নার্গিস বেগমঃ

 

১৯৪২ সনে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা-আব্দুল কাইয়ুম তালুকদার। পৈতৃক নিবাস বাশাইল উপজেলার টেংগুরিয়া পাড়া। শৈশবে মংমনসিংহ জেলা শহরে লেখাপড়া শুরু। ১৯৫৬ সনে বিদ্যাময়ী সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় হতে ম্যট্রিকুলেশন পাশ করে ১৯৫৮ সনে ইন্টারমিডিয়েট এবং ১৯৬০ সনে বি.এ. ডিগ্রি লাভ করেন কুমুদিনী কলেজ হতে। ভারতেশ্বরী হোমস-এ শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু। ১৯৬৮ সনে বিন্দুবাসিনী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে যোগদান করেন। বাংলা বাজার সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে স্বল্পকাল শিক্ষকতা করে ভোলা গভর্মেন্ট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা হিসাবে যোগদান করেন। জাতীয় শিক্ষাক্রম ও টেক্সট বুক বোর্ড কমিটির কর্মকর্তা হিসাবে সুদীর্ঘ চৌদ্দ বছর অতিবাহিত করেন। চাকুরী জীবনের শেষ অধ্যায় অতিবাহিত করেন সৈয়দ আঃ জববার বালক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে। 

 

৪৫।       নূর আলমগীরঃ

ক্যাপ্টেন (অবঃ) নূর আলমগীর বাসাইল উপজেলার  কাঞ্চনপুরে ২০ এপ্রিল ১৯৫৪ সনে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ ছিলেন সৎ পুলিশ কর্মকর্তা। মাতা মিসেস হামিদা বেগম। শৈশবে গ্রামের পাঠশালায় লেখা পড়া শুরু। জামুর্কী নবাব স্যার আঃ গণি উচ্চ বিদ্যালয় হতে ১৯৬৯ সনে এস.এস.সি প্রথম বিভাগে পাশ করেন। ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজ হতে প্রথম বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অবদান রাখেন। বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীতে ১৯৭৪ সনে কমিশনার র‌্যাংকে যোগদান করেন। ১৯৮৩ সনে ক্যাপ্টেন হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাহায্য সহযোগিতা করে আসছেন। তিনি টাঙ্গাইল জেলা সমিতির সক্রিয় সদস্য, বাওয়া ক্লাবের আজীবন সদস্য এবং বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমিতির সদস্য।

 

৪৬।       বাবু দিলিপ কুমার সাহা

            বাবু দিলিপ কুমার সাহা, জন্ম- বাসাইল গ্রামে। পিতা স্বর্গীয় প্রফুল্ল কুমার সাহা। বাসাইল মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার হাতে খড়ি। ঢাকা গ্রাজুয়েট হাইস্কুলে পড়াশোনা করেন। ১৯৭৪ সনে বাসাইল গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস, এস, সি এবং করটিয়া সা’দত কলেজ থেকে ১৯৭৬ সনে এইচ,এ,সি পাশ করেন। ডিগ্রীতে পড়াশোনা করলেও পরবর্তীতে আর পরীক্ষা দেয়া হয়নি। বর্তমানে টাংগাইলস্থ  আলাউদ্দিন টেকস্টাইল মিলস্ (এটিএম) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। বাসাইল ব্রীজ সংলগ্ন সাহাপাড়াস্থ তাদের বাড়ীতে প্রতি বছর অত্যন্ত জাঁকজমকের সাথে দুর্গা পুঁজা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় তাঁরা গরীব হিন্দু জনগণের মাঝে প্রচুর অর্থ ও বস্ত্র সামগ্রী দান করে থাকেন।

 

 

 

৪৭।       ব্রিঃ ফজলুর রহমানঃ          

ব্রিঃ ফজলুর রহমান, পিতা মরহুম খঃ হায়দার চৌধুরী, মাতা মরহুমা রাবেয়া হায়দার চৌধুরী। ১৯৪৩ সনের ৩ মার্চ  আইসরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন আইসরা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। তিনি ১৯৬১ সনে বিবেকানন্দ হাইস্কুল হতে মেট্রিক পাশ করেন। এরপর তিনি ১৯৬২ সনে সামরিক শিক্ষানবীস হিসেবে পাকিস্তানের রাওয়াল পিন্ডিতে যোগদান করেন। ১৯৭৪ এর ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত সামরিক বাহিনীতে চাকুরী করেন। ১৯৭১ সনে বিশাল কাদেরীয়া বাহিনীতে সেকেন্ড কমান্ড হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি শিক্ষার ক্ষেত্রে যথেষ্ট অবদান রেখে গেছেন ১। শহীদ জাহাঙ্গীর হাইস্কুলের (দীঘুলিয়া) প্রতিষ্ঠাতা (১৯৭২)। ২। সয়াচাক্তা অগ্রণী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা (১৯৭৩)।৩। নওয়াব বাড়ী মহা বিদ্যালয়ের (বর্তমানে আউলিয়াবাদ কলেজ) প্রতিষ্ঠাতা। তিনি ২০০২ সনে মৃত্যু বরণ করেন।

 

৪৮।       বেল্লাল হোসেন ভূইয়া

বেল্লাল হোসেন ভূইয়া, জন্ম- ১৯৫০ সনে বাসাইল উপজেলার ফুলকী ইউনিয়নের ফুলকী গ্রামে। পিতা- মরহুম ফয়েজ উদ্দিন মিয়া। যশিহাটী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক শিক্ষালাভের পর ১৯৬৫ সনে এইচ,এম, ইনস্টিটিউশন হতে এইচ,এস,সি এবং ১৯৭০ সনে বি,এস,সি, পাশ করেন। ১৯৭৪ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে গণিত শাস্ত্রে এম,এস,সি লাভের পর ময়থা জনতা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন শেষে ১৯৭৮ সনে জনতা ব্যাংকে অফিসার হিসাবে যোগদান করেন। একজন আদর্শ ব্যাংকার হিসেবে তিনি যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছেন।

 

৪৯।       মতিয়ার রহমান খানশুরঃ

মতিয়ার রহমান খানশুর, জন্ম আনুমানিক ১৯৩২ সনে বাসাইল উপজেলার বাসাইল গ্রামের পশ্চিম পাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। পিতা মরহুম ফখর উদ্দিন খানশুর। শৈশবে বাসাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শুরু, পরবর্তীতে টাঙ্গাইল বিন্দুবাসিনী বালক উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীতে যোগদানের মাধ্যমে কর্ম জীবনে প্রবেশ করেন। ৭১-এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে হানাদার বাহিনীর নির্মম নির্যাতন হতে দেশমাতৃকাকে রক্ষার জন্য প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেন। সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে রয়েছে তার অকৃপণ হাত।

 

 

৫০।       মমতাজ উদ্দিন তালুকদার

            মমতাজ উদ্দিন তালুকদার, জন্ম- ১৯০৪ সন কাউলজানী তালুকদার বাড়ীতে। পিতা- মরহুম নওশের আলী তালুকদার। কলিকাতা হতে লেখা পড়া শুরু। পরবর্তীতে ১৯২২ সনে পাবনা এ্যাডওয়ার্ড কলেজ থেকে আই,এ, পাশ করেন। অতঃপর ফিরে আসেন কাউলজানী গ্রামে। ১৯২৯ সনে প্রতিষ্ঠা করেন কাউলজানী জুনিয়র মাদ্রাসা। মাদ্রাসাটি জুনিয়র থেকে হাই মাদ্রাসায় উন্নীত হবার পর সেক্রেটারীর দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে প্রাথমিক শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। মৃত্যুর পূর্ব পযন্ত তিনি কাউলজানী নওশেরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ছিলেন।

 

৫১।       মাহফুজুল হক রতন

মাহফুজুল হক রতন, জন্ম- ১৯৫৮ সনে বাসাইল উত্তরপাড়া গ্রামে। পিতা- মোঃ নুরুল হক মিয়া। ডিগ্রী পাশ। তৈরী পোষাক শিল্পের সাথে জড়িত। সমাজ সেবক, ধর্মানুরাগী হিসাবে ব্যাপক পরিচিতি রয়েছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাহায্য সহযোগিতার জন্য তিনি উপজেলায় খ্যাতি অর্জন করেছেন।

 

৫২।       মাহমুদ কামাল

 

১৯৫৭ সনে ২৩ অক্টোবর টাঙ্গাইল শহরের আকুর টাকুর পাড়াতে জম্ম নিলেও তার নাড়ীর টান বাসাইল উপজেলার কাশিল ইউনিয়নের দাপনাজোড় গ্রামে। তিনি প্রথম বিভাগে এস.এস.সি. পাশ করেছেন ১৯৭৪ সনে । এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনার্সসহ এম. এ. পাশ করেন ১৯৮৪ সনে । বর্তমানে ঘাটাইল জি. বি. জি. কলেজে বাংলার প্রভাষক হিসাবে কর্মরত। সত্তর দশকের অন্যতম কবি। জেলার ঐতিহ্যবাহী সাহিত্য সংগঠন অরণির প্রতিষ্ঠাতা। টাঙ্গাইল সাধারণ গ্রন্থাগারের টানা ৬ বার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। দৈনিক মানব জমিন পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি। বাংলা একাডেমি, শিল্পকলা একাডেমি ও টাঙ্গাইল ক্লাবের সদস্য। সাহিত্যে তাঁর অবদানের জন্য পেয়েছেন শহীদ বুদ্ধিজীবি সম্মাননা। রচিত কাব্য গ্রন্থঃ কবিতার মত কিছু কথা, পরকীয়া, স্বপ্নের রাজকন্যা, বিরাম চিহ্ন, দ্বিতীয় জীবনসহ ১০টি কাব্যগ্রন্থ। গল্প গ্রন্থঃ গৃহ পরিচারিকার গৃহভৃত্য। প্রবন্ধঃ চলমান রাজনীতি ও অন্যান্য প্রসঙ্গ, ভ্রমনঃ দেশের বাড়ী পাশের বাড়ী। সম্পাদনাঃ ষাটের দশকের কবিতা, শ্যামল সেনের কবিতা, সত্তর দশকের কবিতা প্রভৃতি।

 

৫৩।       মাহবুব সাদিক

মাহবুব সাদিক, জন্ম-২৫ অক্টোবর,১৯৪৭ সন, বাসাইল উপজেলার আইসড়া  গ্রামে। পিতা-মোয়াজ্জেম হোসেন খান। ১৯৬২ সনে টাংগাইল বিন্দুবাসিনি হাই স্কুল থেকে এস,এস,সি, ১৯৬৪ সনে করটিয়া সা’দত কলেজ থেকে এইচ,এস,সি, এবং ১৯৬৮-৬৯ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়  থেকে বাংলায় সম্মান ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। বুদ্ধদেব বসুর কবিতাঃ বিষয় ও প্রকরণ এর উপর গবেষনা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯০ সনে পিএইচডি ডিগ্রী লাভ করেন। সরকারী কলেজে অধ্যাপনা দিয়ে কর্মজীবনের শুরু। কবি ও গল্পকার হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। স্বপ্ন চৈতন্যের ডালপালা, সুন্দর তোমার নির্জনে, জোৎস্নাবোনা রাত প্রভৃতি তাঁর অন্যতম কয়েকটি প্রকাশিত গ্রন্থ। খালেদ মোশারফ স্মৃতি পদক ও নাজ স্মৃতি স্বর্ণপদকে ভুষিত হন।

 

৫৪।       মাহবুব হাসান

মাহবুব হাসান, জন্ম- ২৮ এপ্রিল ১৯৫৪ সন আইসড়া গ্রামে। পিতা- মোয়াজ্জেম হোসেন খান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় সম্মান এবং স্নাতকোত্তর পাশ করেন। সাংবাদিকতায় পেশায় কর্মজীবনের শুরু। দৈনিক জনতা পত্রিকার সহকারী সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তন্দ্রার কোলে হরিণ, তোমার প্রতীক, নিঃস্বর্গের নুন প্রভৃতি তার প্রকাশিত অন্যতম কয়েকটি বিখ্যাত গ্রন্থ। ১৯৮৪ সনে আসাফ উদদৌলা রেজা স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার প্রাপ্ত হন।

 

৫৫।       মিঞা মোঃ আবুল কাশেমঃ

মিঞা মোঃ আবুল কাশেম টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার কাউলজানী ইউনিয়নের বাদিয়াজান গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পারবারে ৭ ডিসেম্বর ১৯৪২ সনে জন্মগ্রহণ করেন। পিতাঃ মরহুম আব্দুল করিম মিয়া, মাতা-মাখন নেছা। শৈশবে মিয়া মোঃ আবুল কাশেম কাউলজানী পাঠশালায় লেখাপড়া শুরু করেন। ১৯৫৮ সনে কাউলজানী নওশেরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় হতে কৃতিত্বের সাথে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে মওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজ হতে আই. এ পাশ করেন। চিটাগাং সিটি কলেজ হতে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। শিক্ষকতা দিয়েই কর্মজীবনের শুরু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে শিক্ষায় স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করে সুদীর্ঘকাল সরকারী হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সনে জেলা শিক্ষা অফিসার হিসাবে পদোন্নতি লাভ করেন। এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণে রয়েছে তাঁর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ অবদান। বাসাইল বালিকা বিদ্যালয় ও বাসাইল এমদাদ হামিদা কলেজ নির্মাণের পেছনে রয়েছে তার অক্লান্ত শ্রম ও মেধা।

 

৫৬।       মুসলিম উদ্দিন আহমেদ

            মুসলিম উদ্দিন আহমেদ, জন্ম-২৪ নভেম্বর ১৯৭১ তারিখে বাসাইল গ্রামে। পিতা- শামছুল হক। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা শেষে বাসাইলের এমদাদ হামিদা ডিগ্রী কলেজ থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রী লাভ করেন। দৈনিক পূর্বাকাশ পত্রিকার রিপোর্টার হিসেবে কর্মজীবনের শুরু। বর্তমানে দৈনিক পূর্বাকাশ পত্রিকার পাশাপাশি দৈনিক মানব জমিন পত্রিকার বাসাইলের প্রতিনিধি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

 

৫৭।       মুহম্মদ আব্দুর রহমান খান

বাসাইল উপজেলার কাউলজানী গ্রামে ১৯৪৪ সনে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মোহাম্মদ হোসেন খান (গিনি মিয়া), শৈশবে টাঙ্গাইল শহরে লেখা-পড়া শুরু। ১৯৬০ সনে বিন্দুবাসিনী বালক বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে নটরডেম কলেজ হতে ১৯৬৩ সনে ইন্টারমিডিয়েট, ১৯৬৫ খ্রিঃ বি.এ. এবং ১৯৬৭ সনে ঢাকা বিশ্বাবদ্যালয় থেকে সমাজতত্বে এম.এ ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭২ সনে বাংলাদেশ জুট মিলস্ কর্পোরেশন-এর একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৭৬ সনে ইনভেষ্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আই. সি. বি) তে যোগদান করেন।  দীর্ঘকাল চাকুরী জীবনে সততা ও ন্যায় নিষ্ঠতার সাথে অতিবাহিত করে ২০০২ সনে ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার হিসেবে আই. সি. বি থেকে অবসর লাভ করেছেন। সমাজ সেবায় রয়েছে তাঁর বিশেষ অবদান। বৃহত্তম ময়মনসিংহের সাংস্কৃতিক ফোরামের সহ সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। বনানী রোটারি ক্লাবের তিনি সভাপতি। মঞ্চ নাটকসহ রেডিও টেলিভিশনের একজন প্রথম গ্রেডের নিয়মিত শিল্পী।

 

৫৮।       মেজর আবু মুরাদ মোহাম্মদ দাউদ খানঃ

মেজর আবু মুরাদ মোহাম্মদ দাউদ খান, পিতা -মরহুম আইয়ুব খান, জন্ম  ১৭ ফেব্রুয়ারি- ১৯২৮ সনে বাসাইলের ফুলকি ইউনিয়নের ঝনঝনিয়া গ্রামে। তিনি কোলকাতা থেকে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। কিন্তু ঐ সময়ে ২য় বিশ্বযুদ্ধের কারণে টাঙ্গাইলে চলে এসে শিবনাথ উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিক ও সা’দত কলেজ হতে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। তিনি ৭ নভেম্বর ১৯৪৯ সনে পাকিস্তান আর্মি বিভাগে বেলুজ রেজিমেন্টে ক্যাডেট কোর হিসাবে যোগ দেন। তৎপর ১৫ জুন ১৯৫০ সনে সেকেন্ড লেফটেনেন্ট হিসাবে পদোন্নতি লাভ করেন। পর্যায়ক্রমে তিনি মেজর হিসাবে উন্নীত হন। ২৭ আগষ্ট ১৯৭৫ সনে অবসর গ্রহণ করেন। চাকুরী জীবনে তিনি সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। উল্লেখযোগ্য পদক হচ্ছে রি-পাবলিক, তানজা-ই-জান, ভিক্টোরিয়া ও কন্টিভিশন।

 

৫৯।       মোশারফ আলী খানশূর (মন্টু মিয়া)ঃ

 

মরহুম মোশারফ আলী খানশূর (মন্টু মিয়া)-এর পিতা ইয়াসিন আলী খানশূর, মাতা শরিফা খানম। ১৯১৫ সনে বাসাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন করটিয়া মাদ্রাসা হতে এরপর শিবনাথ স্কুল হতে মেট্রিক পাশ করেন। কলকাতা নগর কলেজ হতে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। এরপর তিনি সামাজিক কাজ অর্থাৎ জনগণের সেবায় আত্ম নিয়োগ করেন। আইয়ুব খা’র আমলে যখন ইউনিয়ন পরিষদ গঠিত হয় তখন তিনি দু’বার ইউ-পি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।  পোষ্ট অফিস, পশু ডাক্তার খানা, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির অফিস, ইউনিয়ন কাউন্সিল সংলগ্ন একটি পুকুর স্থাপনের ব্যাপারে নিজস্ব ভূমি দান করেন। তিনি উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডের জন্য উপজেলা হতে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার পান।

 

৬০।       মোঃ আকতারুজ্জামান ভূঁইয়া

            ১৫/০৫/১৯৫০ সনে কাশিল গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- আলহাজ আব্দুল কাদের ভূঁইয়া। কাশিল প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু। ময়মনসিংহ জেলা স্কুলেও তিনি পড়া-শোনা করেছেন কিছুদিন। তারপর ১৯৬৬ সনে করটিয়া এইচ,এম ইনষ্টিটিউশন থেকে এস,এস,সি পাস করেন। ১৯৬৮ সনে সাদত কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ১৯৭২ সনে ময়মনসিংহ আকতারুজ্জামান কলেজ (বর্তমানে ময়মনসিংহ কলেজ) থেকে স্নাতক পাশ করেন। ১৯৭১ সনে সরাসরি সাব ইন্সপেকটর হিসাবে পুলিশ বিভাগে যোগদান করেন। সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ শেষে বৃহত্তর ময়মনসিংহসহ নারায়ণগঞ্জ, কক্সবাজার জেলায় দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব ও কর্তব্য পরায়ণ আকতারুজ্জামান ভূঁইয়া দীর্ঘ ১৬ বৎসর দক্ষতার সাথে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় দায়িত্ব পালন করেন। স্বীয় দক্ষতা এবং যোগ্যতার কারণে ১৯৮০ সনে ইন্সপেক্টর এবং ১৯৮৬ সনে সহকারী পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি লাভ করেন। কর্মক্ষেত্রে দক্ষতা ও যোগ্যতার জন্য ৬ বার এ, আই, জি, পদক,  ১ বার বাংলাদেশ পুলিশ পদক এবং ২ বার রাষ্ট্রপতি পদক প্রাপ্ত হন। বর্তমানে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখায় কর্মরত থেকে দক্ষতা এবং যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখে চলেছেন।

 

৬১।       মোঃ আনোয়ারুর রহমানঃ

 

মোঃ আনোয়ারুর রহমান টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামে ১৯২৮ সনে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম আব্দুল করিম, মাতা আমিনা বেগম। ১৯৪৫ সনে জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। সা’দত কলেজ করটিয়া হতে ইন্টারমিডিয়েট ও ডিগ্রী পাশ করেন। ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ হতে বি. এড. পাশ করেন ১৯৬৯ সনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম. এ. ডিগ্রী লাভ করেন। হারিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু। স্বল্পকাল পরেই নবাব স্যার আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর লাউহাটি আযহার মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ে সুদীর্ঘ ৩০ বছর অতিবাহিত করেন। ১৯৭২ সনে লাউহাটী কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৮৮ সনের জানুয়ারি মাসে শিক্ষকতা থেকে অব্যহতি লাভের পরও এই ত্যাগী, আত্মপ্রত্যয়ী, সংগ্রামী পুরুষ পুনরায় কাউলজানী মহাবিদ্যালয়ে স্বল্পকাল অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করেন।

৬২।       মোঃ আব্দুর রাজ্জাকঃ

মোঃ আব্দুর রাজ্জাক টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার দাপনাজোর গ্রামে ১৯১৭ সনে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা সৈয়দ আলী আহাম্মদ। করটিয়া এইচ.এম. ইনষ্টিটিউট হতে ১৯৩২ সনে ১ম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। সা’দত কলেজ করটিয়া হতে ১৯৩৪ সনে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইতিহাসে বি.এ, অনার্সসহ এম.এ ডিগ্রি লাভ করেন। কলকাতার ডেভিড হেয়ার কলেজ হতে প্রথম স্থান অধিকার করে বি.টি ডিগ্রি লাভ করেন। প্রিন্সিপাল ইব্রাহীম খাঁর প্রিয় ছাত্র হিসাবে তাঁর আহবানে সা’দত কলেজে অধ্যাপনা শুরু করেন। ১৯৪২ সনে বেঙ্গল সিভিল সার্ভিসের সদস্য হিসাবে ম্যাজিস্ট্রেট পদে যোগদান করেন। ১৯৬৯ সনের এপ্রিল মাসে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে অকাল মৃত্যুবরণ করেন। কর্মজীবনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান নিমার্ণে রয়েছে তাঁর বিশেষ অবদান।

 

৬৩।       মোঃ আঃ রহমান খানঃ

মোঃ আঃ রহমান খান, জন্ম ১৯৪৮ সন বাসাইল উপজেলার হাবলা উত্তর পাড়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। পিতা আদর্শ স্কুল শিক্ষক মোঃ নায়েব আলী খান। শৈশবে গ্রামের স্কুলে লেখা পড়া শুরু। ১৯৬৩ সনে জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস. এস. সি, সা’দত কলেজ করটিয়া হতে ১৯৬৫ সনে এইচ. এস. সি. পাশ করে ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজ।  ১৯৭১ সনে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে রয়েছে তার বিশেষ অবদান। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাকরির মাধ্যমে কর্ম জীবনের শুরু। টাঙ্গাইল জেলা সদর ও কালিহাতী উপজেলার সরকারী চিকিৎসক হিসেবে রয়েছে তার সুনাম। সিভিল সার্জন হিসাবে ফেনী, গাজীপুর ও ঢাকায় দায়িত্ব পালন করেনে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিচালক (অর্থ), পরিচালক (প্রশাসন) হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। আমেরিকার পিটসবার্গ ইউনিভার্সিটি থেকে প্রজনন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় উচ্চতর প্রশিক্ষণ লাভ করেন এবং যুক্তরাজ্যের লিভার পুল ইউনিভার্সিটি থেকে শিক্ষকতার প্রশিক্ষণ লাভ করেন। চিকিৎসা পেশার সাথে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কল্যাণমূলক সংগঠনের সাথে জড়িত। উল্লেখ্য বি. এম. এ-র সম্পাদক হিসাবে সুদীর্ঘকাল দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ পরিবার পরিকল্পনা সমিতির আজীবন সদস্য এবং পরিবার পরিকল্পনার সফল কার্যক্রমের জন্য তিনি রাষ্ট্রপতি পুরস্কারে ভূষিত হন।

 

৬৪।       মোঃ আব্দুল মালেক মিঞা

 

বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ঢংপাড়ায় ১৯৫১ সনে ১৪ আগষ্ট এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। মোঃ আব্দুল মালেক মিঞা কৃতিত্বের সঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। উক্ত বিশ্ববিদ্যালয় হতে পরিসংখ্যানে বি.এস সি (সম্মান) এবং একই বিষয়ে এম.এস সি ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৮৯ সনে ইংল্যান্ডের ওয়ার ওইক বিশ্ববিদ্যালয় হতে পোষ্ট গ্রাজুয়েশন ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭৪ সনে ১৯ নভেম্বর প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চাকুরী গ্রহণ করে কর্ম জীবন শুরু করেন। সুদীর্ঘ ২৭ বছর যাবৎ বিভিন্ন পদমর্যাদায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক অর্থ, ব্যাংকিং, মুদ্রানীতি সংক্রান্ত কর্মকান্ডে বিশেষ অবদানের জন্য সর্ব মহলে প্রশংসা অর্জন করেন। Finance on Foreign Exchange and Foreign Trade  শিরোনামে তিনি একটি গ্রন্থ প্রণয়ন করেন। গ্রন্থটি Banking Diploma কোর্সে নিয়মিত পড়ানো হয়। বর্তমানে তিনি মহা-ব্যবস্থাপক হিসাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিভাগে দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। তিনি ১৯৭১ সনে মহান মুক্তি যুদ্ধের একজন সক্রিয় সৈনিক হিসাবে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন এবং অসীম বীরত্বের সঙ্গে যুদ্ধ করেন।

 

 

 

৬৫।       মোঃ আব্দুল মালেকঃ

মোঃ আব্দুল মালেক ১৯৫৩ সনের ৩১ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার কাশীল ইউনিয়নের অন্তর্গত বাংড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। প্রাথমিক ও জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষায় তিনি মেধা তালিকা ভুক্ত হয়ে বৃত্তি লাভ করেন। এলাসিন টি. জে. উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৮ সনে প্রথম বিভাগে এস. এস. সি এবং ১৯৭০ সনে সা’দত কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে এইচ. এস. সি পাশ করেন। অতঃপর ১৯৭৩ সন ও ১৯৭৪ সনে যথাক্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। একজন বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে ১৯৭১ সনে স্বাধীনতা যুদ্ধে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন। চাকুরী ক্ষেত্রে তিনি এলেংগা সামসুল হক কলেজ এবং মির্জাপুর মহাবিদ্যালয়ে অর্থনীতির প্রভাষক ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি সরকারী চাকুরীতে যোগদান করেন। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস ইকনোমিক ক্যাডারের সদস্য হিসাবে বর্তমানে পরিকল্পনা কমিশন, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে  উপ-প্রধান (Deputy Chief) হিসাবে কর্মরত আছেন। তিনি ঢাকাস্থ বাসাইল উপজেলা কল্যাণ সমিতির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

 

৬৬।       মোঃ আব্দুস সাত্তারঃ

মোঃ আব্দুস সাত্তার বাসাইল উপজেলার বাংড়া গ্রামে ১৯৪৮ সনে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা আব্দুর রহমান বিশিষ্ট ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিত্ব। শৈশবে গ্রামের পাঠশালায় প্রাথমিক বৃত্তি লাভ সহ লেখাপড়া শেষ করেন। জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয় হতে ১৯৬৩ সনে প্রথম বিভাগে এস. এস. সি পাশ করেন। সা’দত কলেজ করটিয়া হতে ১৯৬৫ সনে এইচ. এস. সি পাশ করে বুয়েটে ভর্তি হন। ১৯৬৯ সনে বুয়েট হতে বের হয়ে চিটাগাং ষ্টিল মিলস্-এ এসিষ্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগদান করেন। এরপর ভারতের আই. আই. টি. খড়গপুর হতে মাষ্টার্স অব টেকনোলজি ডিগ্রী লাভ করে পুনরায় চিটাগাং ষ্টিল মিলে যোগদান করেন। বাংলাদেশ ইস্পাত ও প্রকৌশল সংস্থা-এর প্রধান কার্যালয়ে অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী পদে যোগদান করেন। ১৯৮৮ সনে চলে আসেন নারায়নগঞ্জ ডকইয়ার্ড এ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস-এ মহাব্যবস্থাপক হিসাবে। টঙ্গীস্থ ন্যাশনাল টিউব লিঃ এ যোগদান করেন। অতঃপর প্রধান কার্যালয়ে সিনিয়র জেনারেল ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্ব পালনের পর ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসাবে ঢাকার তেজগাঁও ইর্স্টান টিউবসঃ লিঃ এ যোগদান করেন। বর্তমানে ন্যাশনাল টিউবসঃ লিঃ এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। 

 

৬৭।       মোঃ আবুল কাশেম

মোঃ আবুল কাশেম, জন্ম- ১ জানুয়ারী, ১৯৬৫ সন ফুলকী ইউনিয়নের করটিয়াপাড়া গ্রামে। পিতা- মোঃ আবুল হোসেন মাষ্টার। ময়থা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর ১৯৭৯ সনে টাংগাইল বিন্দুবাসিনি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস, এস, সি, ১৯৮২, ১৯৮৯ এবং ১৯৯২ সনে করটিয়া সা’দত কলেজ থেকে যথাক্রমে এইচ, এস, সি,  বি, এ এবং এম, এ পাশ করেন। একজন ফুটবল খেলোয়ার হিসাবে তাঁর খ্যাতি রয়েছে। প্রথম জীবনে ঢাকা ইষ্টার্ন ক্লাব, পিডব্লিউডি এবং ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে নিয়মিত ফুটবল খেলতেন। টাংগাইল জেলা দলেও ফুটবল খেলেছেন। টাংগাইল জেলা সমবায় ফেডারেশনে বর্তমান সচিব, সমবায় ব্যাংক টাংগাইলের নির্বাচিত পরিচালক, টাংগাইল জেলা ক্রীড়া সংস্থার সহকারী সম্পাদক এবং বাসাইল বিআরডিবির চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।

 

৬৮।       মোঃ আমিনুল ইসলাম

মোঃ আমিনুল ইসলাম, জন্ম-১৬ জুলাই ১৯৭০ সনে, বাসাইল গ্রামে। পিতা- আলহাজ আঃ বশির মিয়া। বাসাইল জরাশাহীবাগ প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর বাসাইল গোবিন্দ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৬ সনে এস,এস,সি, ১৯৯৮৮ সনে এমদাদ হামিদা ডিগ্রী কলেজ থেকে এইচ,এস,সি, এবং ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কৃষি অর্থনীতি বিভাগে অনার্সসহ ১৯৯৮ সনে মাষ্টার্স পাশ করেন। অত্যন্ত মেধাবী মোঃ আমিনুল ইসলাম শিক্ষা জীবনের সকল স্তরে প্রথম বিভাগ অর্জন করেন। তিনি ২০০৫ সনে জাপানের ছাইতামা ইউনিভার্সিটি থেকে পাবলিক পলিসির উপর এম,এস,ডিগ্রী লাভ করেন। ২০০১ সনের ২৮ এপ্রিল বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে ২০তম ব্যাচের কর্মকর্তা হিসাবে চাপাই নবাবগঞ্জ কালেক্টরেটে ম্যাজিস্ট্রেট হিসাবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি সংস্থাপন মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব পদে কর্মরত আছেন।

 

৬৯।       মোঃ আলমাছ আলী  খানঃ

মোঃ আলমাছ আলী  খান বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর পশ্চিম পাড়ার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৬২ সনে জন্মগ্রহণ করেন । পিতা মরহুম আলতাব আলী খান, মাতা মিসেস আছিয়া খানম। শৈশবে গ্রামের মাদ্রাসায় লেখাপড়া শুরু। আদাবাড়ী গহের আলী উচ্চ বিদ্যালয় হতে ১৯৭৭ সনে এস.এস.সি. পাশ করে সা’দত কলেজ হতে ১৯৭৯ সনে এইচ.এস.সি পাশ করেন। এরপর ঢাকা ইনস্টিটিউট অব হেল্থ টেকনোলজিতে ডিপ্লোমা কোর্স সুসম্পন্ন করেন। ১৯৮৩ সনে আই. পি.জি.এম.আর (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়)-এ কর্মজীবন শুরু করেন। এলাকায় মসজিদ নির্মাণ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণ, ঈদগা, মাঠ, কবরস্থান প্রভৃতির ক্ষেত্রে আর্থিক সাহায্য সহযোগিতা করে আসছেন। বাংলাদেশ ডিপ্লোমা মেডিক্যাল এসোসিয়েশনের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বর্তমানে রেড ক্রিসেন্টের সদস্য।

 

৭০।       মোঃ আশিকুর রহমান পলাশ

মোঃ আশিকুর রহমান পলাশ, জন্ম- ৫ নভেম্বর, ১৮৭১ সনে বাসাইল উত্তরপাড়া গ্রামে। পিতা- আলহাজ সালাহউদ্দিন। বাসাইল মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা শেষে বাসাইল সরকারী গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৮ সনে এস,এস,সি পাশ করেন। এমদাদ হামিদা ডিগ্রী কলেজ থেকে ১৯৯০ সনে এইচ,এস,সি, এবং পরবর্তীতে ১৯৯৫ সনে বি,এ,পাশ করেন। সাংবাদিকতা ও মানবাধিকারের  উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে টাংগাইলের সাপ্তাহিক পূর্বাকাশ পত্রিকার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু। ২০০২ সন থেকে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকার বাসাইল উপজেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংবাদিক হিসাবে কর্মরত রয়েছেন। Society of Social Reforms, Kuwait এর সাথে জড়িত। বর্তমানে ঢাকাস্থ সাবাহ ইন্টারন্যাশনাল কিন্ডার গার্টেন  স্কুলের পরিচালক এবং বাসাইল প্রেস ক্লাবের বর্তমান সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। সদা হাস্যময় ও সদালাপী  মোঃ আশিকুর রহমান পলাশ এলাকার একটি পরিচিত মুখ।

 

 

৭১।        মোঃ ইব্রাহীম খানঃ

 

বাসাইল উপজেলার হাবলা ইউনিয়নের দক্ষিণপাড়া সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৫৪ সনে ৭ মার্চ জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা-মরহুম রুস্তম খান। মোঃ ইব্রাহীম খান শৈশবে গ্রামের পাঠশালা থেকে লেখাপড়া শেষ করে ১৯৬২ সনে নবাব স্যার আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। সা’দত কলেজ করটিয়া হতে ইন্টারমিডিয়েট ও ডিগ্রী পাশ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন। তাঁর নেতৃত্বে সা’দত কলেজ ক্রীড়াঙ্গনে গৌরবোজ্জল ভূমিকা রাখেন। ১৯৭১ সনে স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি কাদেরীয়া বাহিনীর সশস্ত্র যোদ্ধা এবং তৎকালে বেসামরিক সহকারী প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা সিটি ‘ল’ কলেজ হতে আইন শাস্ত্রে ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭৩ সনে বি. সি. এস. (প্রশাসন) ক্যাডারে উত্তীর্ণ হন। ১৯৭৩-৮১ সনে পর্যন্ত বাংলাদেশ জুট মিলস কর্পোরেশনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে ডেপুটেশনে নিয়োজিত ছিলেন। ময়মনসিংহ জেলার ম্যাজিষ্ট্রেট হিসাবে ১৯৮২-৮৩ সনে টি. এন. ও. পদে পদোন্নতি লাভ করে বগুড়ার কাহালু উপজেলার প্রথম ইউ. এন. ও. হন। ১৯৯৫ সনে উপসচিব হিসাবে পদোন্নতি লাভের পর ১৯৯৮ সনে শরীয়ত পুর জেলার জেলা প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে আইন মন্ত্রণালয় ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ৭ মার্চ ২০০২ সনে ৫৭ বছর বয়সে সরকারী চাকুরী জীবন থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

 

৭২।       মোঃ কামরুজ্জামান খানঃ

 

৭০ দশকের ছাত্র নেতা ও বাসাইলের সুপরিচিতি ব্যক্তিত্ব মোঃ কামরুজ্জামান খান । পিতা মরহুম আলহাজ্ব এমদাদ আলী খান, মাতা মরহুমা হামিদা খানম। জন্ম ১১ জুলাই ১৯৫৪ সনে বাসাইল থানাধীন বানাইল গ্রামে। তিনি সরকারী বিন্দু বাসিনী বালক উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস. এস. সি. ১৯৭২ সনে সা’দত কলেজ হতে এইচ. এস. সি. ও একই কলেজ হতে ইতিহাস বিভাগে অনার্স পাশ করেন। পরবর্তীতে ১৯৮১ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম. এ. ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি ১৯৭২ সনে টাঙ্গাইল থানা ছাত্রলীগ ও ১৯৭৩ সনে সা’দত কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৭ সনে টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সদস্য পদ লাভ করেন। ১৯৯৬ সনে বি. এন.পিতে যোগদানের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাসাইল এলাকা হতে বিএনপিতে  নির্বাচন করেন।

 

৭৩।       মোঃ খায়রুল আলম (হুমায়ন)ঃ

 

বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুরে ৮ সেপ্টম্বর ১৯৫১ সনে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা-মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। শৈশবে খায়রুল আলম গ্রামের পাঠশালায় লেখাপড়া শেষ করে ১৯৬৬ সনে জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয় হতে প্রথম বিভাগে এস. এস. সি পাশ করেন। ১৯৬৮ সনে সা’দত কলেজ করটিয়া হতে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে পাকিস্তান এয়ারফোর্স জি. ডি পাইলট হিসেবে যোগদান করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে রয়েছে তাঁর সক্রিয় অবদান। ১১ নং সেক্টরে সাবসেক্টর কমান্ডার হিসাবে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ১৯৮০ সনে মেজর হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর বাংলাদেশ জুট মিলস্-এ যোগদান করেন। আদমজী জুট মিলের জেনারেল ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিভিন্ন সমাজ সেবা মূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। ঢাকাস্থ টাঙ্গাইল জেলা সমিতি এবং বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমিতির সক্রিয় সদস্য ছিলেন।

৭৪।       মোঃ খায়রুল আলম (হুমায়ন)ঃ

 

বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুরে ৮ সেপ্টম্বর ১৯৫১ সনে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা-মরহুম আব্দুল ওয়াহেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। শৈশবে খায়রুল আলম গ্রামের পাঠশালায় লেখাপড়া শেষ করে ১৯৬৬ সনে জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয় হতে প্রথম বিভাগে এস. এস. সি পাশ করেন। ১৯৬৮ সনে সা’দত কলেজ করটিয়া হতে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে পাকিস্তান এয়ারফোর্স জি. ডি পাইলট হিসেবে যোগদান করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে রয়েছে তাঁর সক্রিয় অবদান। ১১ নং সেক্টরে সাবসেক্টর কমান্ডার হিসাবে তিনি বিশেষ ভূমিকা রাখেন। ১৯৮০ সনে মেজর হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর বাংলাদেশ জুট মিলস্-এ যোগদান করেন। আদমজী জুট মিলের জেনারেল ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বিভিন্ন সমাজ সেবা মূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন। ঢাকাস্থ টাঙ্গাইল জেলা সমিতি এবং বৃহত্তর ময়মনসিংহ সমিতির সক্রিয় সদস্য ছিলেন।

 

৭৫।       মোঃ সালামত আলী খানশুরঃ

            ১৯২০ সনের ৭ জুলাই বাসাইল গ্রামের ঐতিহ্যবাহী খানশুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । পিতা- মোঃ সাখাওয়াত আলী খানশুর। জন্মের পর শিশুকালে বেশ কিছুদিন কাটে পাবনা জেলার তাড়াশ থানার নানা বাড়ীতে। টাংগাইল বিন্দুবাসিনী স্কুল থেকে  প্রাথমিক শিক্ষা শুরু। সেখান থেকেই ১৯৩৬ সনে ম্যাট্রিক পাশ করেন। অতঃপর ১৯৩৮ সনে ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন। পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করেন। ১৯৪২ সনে মোঃ সালামত আলী খানশুর বিমান বাহিনীতে অফিসার পদে যোগদান করেন। প্রশিক্ষণ সমাপ্ত করে তিনি পাইলট অফিসার হিসাবে নিয়োগ পান। কিন্তু পিতার আপত্তির কারণে বিমান বাহিনীর চাকুরী ছেড়ে তিনি সেনাবাহিনীর কমিশন অফিসার হিসাবে যোগদান করেন। ট্রেনিং শেষে আর্টিলারী কোরের অফিসার হিসাবে বিভিন্ন ফিল্ড রেজিমেন্টে চাকুরী করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি  বৃটিশ সরকারের পক্ষে ক্যাপ্টেন হিসাবে বার্মা ফিল্ডে জাপানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন। ১৯৬৬ সনে মেজর হিসাবে তিনি সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। জানা যায় তৎকালে বৃটিশ আর্মিতে মাত্র ৩ জন বাংগালী অফিসার কর্মরত ছিলেন। তন্মধ্যে সালামত আলী খানশুর অন্যতম। দেশ বিভাগের পর থেকে পাকিস্তান সরকার বাংগালীদের বঞ্চিত করেছে । সেনাবাহিনীর বাংগালী অফিসার হিসাবে জনাব সালামত আলী খানশুরও বঞ্চিত হয়েছেন প্রাপ্য পদোন্নতি থেকে। যে কারণে মেজর হিসাবেই তাঁকে চাকুরী থেকে অবসর নিতে হয়। সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পর তিনি ১৯৬৭-৬৮ সনে ঢাকা জুট মিলের জেনারেল ম্যানেজার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তারপর ১৯৬৯-৭০ এই দুই বছর তিনি ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক (মেয়র) এর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৫ সন থেকে ১৯৭৮ সন পর্যন্ত শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সংগে রাজনীতি করেন। এ মেধাবী দায়িত্বশীল ও ক্ষণজন্মা মানুষটি ১৯৯০ সনের ১৫ ডিসেম্বর মৃত্যুবরণ করেন।

 

৭৬।       মোঃ জামাল উদ্দিনঃ

মোঃ জামাল উদ্দিন, পিতা মরহুম রাইজ উদ্দিন, মাতা মরহুমা জেলেমন নেছা। নিজ গ্রাম একঢালা। তিনি ১৯৪৪ সনে আগষ্টের ৮ তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৫ সনে আইসড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহণ শেষ করে এখানেই নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। অতঃপর ১৯৫৮ সন করটিয়া হাফিজ মাহমুদ ইনষ্টিটিউশন হতে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। সা’দত কলেজ হতে আই. এ. এবং ১৯৬৫ সনে কৃতিত্বের সঙ্গে বি. এ. ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৬৬ সনের ৬ মার্চ হতে আইসড়া হাই স্কুলে শিক্ষকতা দিয়ে তার কর্ম জীবন শুরু। ১৯৯২ সনে হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের পদ প্রাপ্ত হন। তিনি শিক্ষকতার পাশাপাশি সমাজ হিতৈষী কর্মে এতই সুনাম অর্জন করেন যে,  জনগণ ১৯৭৩ সনে প্রথম এবং ১৯৭৭ সনে দ্বিতীয় বারের মত তাকে ফুলকী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। জনগণের কল্যাণকর কাজে তিনি যে সফলতা অর্জন করেন, তাঁর ফলশ্রুতিতে দেউলি খঃ নূরে আলম উচ্চ বিদ্যালয়, একঢালা প্রাথমিক বিদ্যালয়, ফুলকী ঝনঝনিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, জশিহাটি মাদ্রাসা প্রভৃতি প্রতিষ্ঠিত হয়।

 

 

৭৭।       মোঃ তোজাম্মেল হক তালুকদারঃ

মোঃ তোজাম্মেল হক তালুকদার বাসাইল উপজেলার হাবলা টেংগুরিয়া পাড়ায় ১৯৩৫ সনের ৩১ ডিসেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা ছিলেন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি মরহুম মোছলেম উদ্দীন তালুকদার। শৈশবে গ্রামের পাঠশালায় লেখাপড়া শেষ করে ১৯৫১ সনে জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে ১৯৫৩ সনে সা’দত কলেজ করটিয়া হতে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন। ১৯৫৬ সনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ হতে বি. কম. পাশ করেন। ১৯৬১ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে আইন শাস্ত্রে ডিগ্রী লাভ করেন। ঢাকা জেলা জজকোর্টে আইনজীবী হিসেবে আইন ব্যবসায় আত্মনিয়োগ করেন। পরবর্তীতে টাঙ্গাইল জজকোর্টে সাফল্যের সাথে আইন ব্যবসায় আছেন। মুসলিম লীগের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলার ছিলেন এবং ১৯৭০ সনে মুসলিম লীগ সমর্থিত এম. পি. ক্যান্ডিডেট হিসাবে প্রতিযোগিতা করেন। ১৯৪৭-৪৮ সনে নিজ গ্রামে জাহেরিয়া নৈশ বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৯-৮০ সনে রোটারি ইন্টারন্যাশনাল টাঙ্গাইল ক্লাবের সেক্রেটারি ও পরবর্তীতে সভাপতির আসন অলঙ্কৃত করেন। ১৯৯৬-২০০০ সন পর্যন্ত পর পর দু’বার বাংলাদেশ ফ্যামিলি প্লানিং এসোসিয়েশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেনে। ১৯৯০ সন হতে অদ্যাবধি টাঙ্গাইল জেলা সদর রোড, আকুর টাকুর পাড়া জামে মসজিদের সভাপতি। ১৯৯৬ সন হতে অদ্যাবধি টেংগুরিয়া পাড়া তালুকদার বাড়ি জামে মসজিদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ১৯৭৯-৮০ সনে টাঙ্গাইল জেলা এডভোকেট বারের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৯০-৯১ সনে সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।

 

৭৮।       মোঃ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া

            মোঃ তোফাজ্জল হোসেন মিয়া,জন্ম-১৯০৯ সন, বালিনা, বাসাইল। পিতা- মোঃ নকীর উদ্দিন। শিক্ষা শেষে টাংগাইলের বিখ্যাত পাকুল্যার চৌধুরী এষ্টেট এবং করটিয়া জমিদারী এষ্টেটের নায়েব হিসাবে কর্মজীবনের শুরু। পরবর্তীতে ময়মনসিংহ জেলা জজ কোর্টে জুড়ি বোর্ডের সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও বাসাইল ইউনিয়ন পরিষদে একটানা ২২ বৎসর সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। এ সময় ভাইস চেয়ারম্যান এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। বাসাইল গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সদস্য এবং বালিনা খোরশেদ ফজিলাতুননেছা দাখিল মাদ্রাসার অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। ১৯৮৯ সনের ১৪ সেপ্টেম্বর তিনি পরলোক গমন করেন।

 

৭৯।       মোঃ দেলোয়ার হোসেন খান রাজীবঃ

 

১৯ ডিসেম্বর ১৯৫৬ সনে টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার হাবলা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা- আলহাজ্ব হায়দার আলী খান, শৈশবে গ্রামের পাঠশালায় লেখাপড়া শুরু। ১৯৭২ সনে জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস. এস. সি. পাশ করার পর ঢাকা তিতুমীর কলেজ হতে এইচ. এস. সি. পাশ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতককোত্তর ডিগ্রী লাভ করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন কালে মহসীন হলের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সনে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা হিসাবে সরাসরি যোগদান করেন। পদোন্নতির বলে বর্তমানে উপ-পরিচালকের দায়িত্ব পালন করছেন। ১৯৭১ সনে মহান মুক্তিযুদ্ধের কাদেরীয়া বাহিনীর সাহসী যোদ্ধা হিসাবে সক্রিয় অবদান রাখেন। মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল নির্বাচনে সারা দেশের মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যক্ষ ভোটে সম্পাদক মন্ডলীর সম্মানিত সদস্য নির্বাচিত হন।

 

৮০।       মোঃ দেলোয়ার হোসেন মিয়া

            ১৯৬৭ সনের ৫ জুন তারিখে কাশিল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- মোঃ মাখন মিয়া। কাশিল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু। অতঃপর কে,বি,এন, উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ১৯৮৩ সনে এস, এস, সি পাশ করেন। করটিয়া সা’দত কলেজ থেকে ১৯৮৫ ও ১৯৮৮ সনে যথাক্রমে উচ্চ মাধ্যমিক ও বি, এস, সি পাশ করেন। মেধাবী মোঃ দেলোয়ার হোসেন ১৯৯০ সনে অনুষ্ঠিত ১২তম স্পেশাল বি, সি, এস, পরীক্ষায় পুলিশ ক্যাডারে সহকারী পুলিশ সুপার পদে নিয়োগ লাভ করেন। কর্মজীবনে প্রবেশের পর তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। সহকারী পুলিশ সুপার হিসাবে নিয়োগ লাভের পর ফেনী, রাঙ্গামাটি এবং প্রধান মন্ত্রীর কার্যালয়ে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের দায়িত্ব পালন করেন। অতঃপর পদোন্নতি পেয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ, নওগাঁ, গোপালপুর ও খুলনা জেলায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে  এ, আই, জি, সাপ্লাই এবং পরবর্তীতে বিশেষ পুলিশ সুপার হিসাবে নিরাপত্তা, ইমিগ্রেশন শাখায় দায়িত্ব পালন করেন। র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র‌্যাব) গঠনের প্রথম দিকে তিনি RABএ দায়িত্ব পালন করেন। গত ২৬/০১/২০০৫ তারিখে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার পদে যোগদান করে অদ্যাবধি সেখানে কর্মরত রয়েছেন। কর্মসুত্রে তিনি আমেরিকা, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, সিঙ্গাপুর ও ভারতসহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন।

 

৮১।       মোঃ ফজলুল হক জমাদার

            ১১ জুন, ১৯৪৮ সনে কাশিল গ্রামে মোঃ ফজলুল হক জমাদার জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- মরহুম মেছের জমাদার। মাত্র তিন মাস বয়সে পিতৃহারা হন । তারপর মা ও চাচাদের স্নেহ-যত্নে বেড়ে উঠেন । কাশিল গ্রাথমিক বিদ্যালয়ে তাঁর শিক্ষার হাতে-খড়ি। ১৯৬৪ সনে করটিয়া এইচ,এম ইনষ্টিটিউট থেকে এ, এস, সি, ১৯৬৭ ও ১৯৭০  সনে করটিয়া সাদত কলেজ থেকে এইচ,এস,সি, ও স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। ডিগ্রী লাভের পর ১৯৭০ সনে কে,বি,এন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। শিশুকালে পিতৃহারা ফজলুল হক জমাদার শৈশব কাল থেকে ছিলেন পরম সহিষ্ণু, ধৈর্যশীল ও সহানুভূতি পরায়ণ। ছাত্র জীবন থেকেই তিনি ছিলেন রাজনৈতিক সচেতন। এ কারণে ১৯৬২ সনে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন, ১৯৬৬ সনে ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ এর ১১ দফা আন্দোলনে ছাত্রলীগের কর্মী হিসাবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭০ সনের সাধারণ নির্বাচনকালে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। অতঃপর ১৯৭১ সনে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সনে কাশিল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। সদা হাস্যময় ভদ্র ও বিনয়ী ফজলুল হক জমাদার ১৯৮০ সন থেকে অদ্যাবধি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বাসাইল উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি ১৯৭৪ সনে এবং ১৯৮৪ সনে দুই মেয়াদে কাশিল ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। পরপোকারী, শিক্ষানুরাগী ও দায়িত্বশীল এই ব্যক্তি ১৯৭২ সন থেকে ২০০৫ সন পর্যন্ত বাসাইল উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। বর্তমানে তিনি বাসাইল উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতির পদ অলংকৃত করছেন। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে ১৯৮০ সনে বি,এড এবং ১৯৯৪ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম,এড, ডিগ্রী লাভ করেন। শিক্ষানুরাগী ব্যক্তি হিসাবে তিনি কাশিল আঃ খালেক আঃ কাদের দাখিল মাদ্রাসা, বাঘিল ফুলবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়, টাংগাইল কুমুল্লী নামদার উচ্চ বিদ্যালয়, আটিয়া শাহানশাহী উচ্চ বিদ্যালয়, বাসাইলের ময়থা জনতা উচ্চ বিদ্যালয়, দেউলী খঃ নুর আলম উচ্চ বিদ্যালয়, পূর্বপৌলী নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়  প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা ছাড়াও সখিপুর, বহেড়াতৈল, নলুয়া, দেলদুয়ারসহ বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষা ও সমাজ-কল্যাণমূলক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছেন। একজন প্রিয় শিক্ষক, দায়িত্বশীল সংগঠক এবং সজ্জন ব্যক্তি ‘ফজু স্যার’ বাসাইলের সকলের শ্রদ্ধাভাজন।

 

৮২।       মোঃ মজিবর রহমানঃ

মোঃ মজিবর রহমান, পিতা মরহুম কাজীম উদ্দিন। ১৯৩৯ সনে বাসাইল উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। জরাশাহী বাগ প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক বিদ্যা লাভের পর সংসারের হাল ধরেন। তিনি অতি বিচক্ষণ নীতিবান সমাজ সেবক হিসাবে সুপরিচিত। উদারতা ও সরলতার কারণেরই ১৯৭২ সনে জনগণ তাকে ওয়ার্ড চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন এবং একই সালে আর্টিজেন্স ওয়েল ফেয়ার দ্যা এসোসিয়েন্স এর সেক্রেটারি নির্বাচিত হন। ১৯৭৬ সনে গ্রাম সরকার প্রধান নির্বাচিত হয়ে যথাযথ দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৮ সনে প্রথম বারের মত ইউ. পি. চেয়ারম্যান ও একই বছরে টাঙ্গাইল জেলা চেয়ারম্যান সমিতির সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৭ সনে তিনি পুনরায় বাসাইল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের আসন অলংকৃত করেন। বাসাইল বণিক সমিতির সভাপতি পদে ২৭ বছর যাবৎ নিযুক্ত আছেন। বাসাইল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সাথে ২৩ বছর যাবৎ জড়িত আছেন এবং বর্তমানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। বাসাইল মডেল প্রাইমারি স্কুলের ও এলাকাস্থ দুইটি মসজিদ কমিটির সভাপতির দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। এছাড়াও তিনি সামাজিক অন্যান্য কর্মকান্ডের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। তিনি ২০০০ সনে বাসাইল সদরে মুজীব হাবীব ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।

 

৮৩।       মোঃ মনিরুল ইসলাম মিন্টুঃ

মোঃ মনিরুল ইসলাম মিন্টু ১৯৫৮ সনে বাসাইল উপজেলার করাতি পাড়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা হাজী মোঃ মহিউদ্দিন একজন সৎ ও আদর্শবান ব্যক্তি, মাতা মোছাম্মৎ মোছেনা খাতুন। শৈশবে নিজ গ্রামের বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর ১৯৭৩ সনে করটিয়া এইচ, এম, ইনস্টিটিউশন হতে এস. এস. সি. পাশ করেন ও সা’দত কলেজ করটিয়া হতে এইচ. এস. সি. পাশ করেন। ১৯৮১ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে এম. এ. ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি সা’দত বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ছাত্রদল প্যানেল হতে ভি. পি. পদে নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি বি. এন. পি’র সম্মানিত সদস্য।

 

 

 

৮৪।       মোঃ মুজিবর রহমানঃ

মোঃ মুজিবর রহমান বাসাইল উপজেলার ফুলকী গ্রামে এক শিক্ষিত পরিবারে ১৯৩০ সনে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাল্য জীবনের লেখাপড়া নিজ গ্রামের প্রাইমারি স্কুলে শুরু। তার পিতাও একজন শিক্ষক ছিলেন এবং পিতার পরিচালিত স্কুলে একজন মেধাবী ছাত্র হিসেবে বেশ সুখ্যাতি লাভ করেন। তিনি ১৯৪৫ সনে সুনামের সাথে এস. এস. সি. পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। পরবর্তীতে করটিয়া সা’দত কলেজ হতে আই. এ এবং বি. এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তারপর তিনি পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ব্যাংকে বিশিষ্ট পদে চাকুরী লাভ করেন। পিতার শিক্ষকতা পেশা তাকে আকৃষ্ট করে, ফলে তিনি ব্যাংকের চাকুরী ছেড়ে দিয়ে টিচার্স ট্রেনিং কলেজ হতে সুনামের সাথে বি. এড. ডিগ্রী অর্জন করেন। তিনি কয়েক বছর কালিহাতী উপজেলার মগড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে এবং বাসাইল উপজেলার মিরিকপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদে বহাল ছিলেন। পরবর্তীকালে তিনি কালিহাতী উপজেলার অন্তর্গত গোপালদীঘি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে একটানা ৩৫ বছর বহাল থেকে উক্ত স্কুলের সার্বিক উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করে কর্মময় জীবনকে সার্থক করে তুলেছেন। মুজিবর রহমান একজন বিজ্ঞ শিক্ষক নেতা হিসাবে শিক্ষকদের ন্যায্য দাবী দাওয়া আদায়ে আপোষহীন নেতৃত্ব দান করেছেন। তিনি সুদীর্ঘ ১৬ বছর টাঙ্গাইল জেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি পদে দায়িত্বে ছিলেন। এছাড়াও তিনি নিজ গ্রাম ফুলকীতে একটি হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। শিক্ষকতা থেকে অবসর গ্রহণ করার পরেও গোপালদিঘী উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে ৮ বৎসর কাল দায়িত্ব পালন করেন। স্কুলটির সর্বাঙ্গীন সুন্দরের জন্য নিরলস গতিতে কাজ করেছেন। শিক্ষকতা তার জীবনের মহান পেশা এবং ব্রত।

 

৮৫।       মোঃ রুহুল আমীন ভূইয়া

            ১৯৬৫ সনের ৩১ ডিসেম্বর কাউলজানী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- হাজী মহিউদ্দিন ভূইয়া। সেহরাইল কাউলজানী  প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শুরু। ১৯৮১ সনে কাউলজানী নওশেরিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস,এস,সি এবং ১৯৮৫ সনে কালিহাতী কলেজ থেকে  এইচ,এস,সি পাস করেন। করটিয়া সাদত কলেজ থেকে ১৯৮৭ সনে বি,এ পাস করে বাংলায় এম,এ অধ্যয়ন করেন। এ সময় তিনি শিক্ষা ও সাহিত্য কর্মকান্ডের সাথে জড়িত ছিলেন। সাপ্তাহিক বিদ্রোহী কণ্ঠ পত্রিকায় সর্বপ্রথম লেখালেখি শুরু। তারপর কিছুদিন দৈনিক দিনকাল পত্রিকার বাসাইল প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করেন। ১৯৯৫ সনে টাংগাইল কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংকের বাসাইল-সখিপুর এলাকার পরিচালক নির্বাচিত হন। এলাকার সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের সাথে তিনি নিজেকে সম্পৃক্ত রেখেছেন।

 

৮৬।     মোঃ লুৎফর রহমান খান

 

টাঙ্গাইল জেলার বাশাইল উপজেলার হাবলা উত্তর পাড়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। শৈশবে গ্রামের পাঠশালায় লেখাপাড়া শেষ করে জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুল গণি উচ্চ বিদ্যালয় হতে ১৯৬৮ সনে এস,এস,সি, সা’দত কলেজ করটিয়া হতে ১৯৭০ সনে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন, এ কলেজেই বি.এস.সি অধ্যয়নকালে মুক্তিযুদ্ধে কাদেরীয়া বাহিনীতে সাহসী যোদ্ধা হিসেবে দেশ রক্ষার দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৪ সনে বি,এস,সি পাশ করে ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় উদ্ভিদ বিদ্যা বিভাগে। এম,এস,সি পাশের পর বি.সি.আর.জি ডিগ্রি কলেজ পাকুটিয়ায় অধ্যাপনার মধ্যদিয়ে কর্মজীবনের শুরু। পরবর্তীতে আলাউদ্দিন সিদ্দিকী মহাবিদ্যালয়ে স্বল্পকাল অধ্যাপনার পর বি.এস.টি. আই-তে ১৯৮১ সনে যোগদান করেন। পরিশ্রম ও প্রতিভা বলে পদোন্নতি লাভের মধ্যদিয়ে পরিচালক, সার্টিফিকেশন অব মার্ক (সি.এম) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।

 

৮৭।       মোঃ শরীফ উদ্দিন খান দীপুঃ

 

টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর কাজিরা পাড়ায় ১৯৫৮ সনে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা-মরহুম শওকত আলী খান। টাঙ্গাইল বিন্দুবাসিনী স্কুলে লেখাপড়া শুরু। করটিয়া এইচ. এম. ইনষ্টিটিউটে নবম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করে বর্ণী হাই স্কুল হতে ১৯৭৫ সনে এস. এস. সি. পাশ করেন এবং সা’দক কলেজ করটিয়া ভর্তি হন। ১৯৭৭ সনে আইডিয়াল কলেজ হতে এইচ. এস. সি. পাশ করেন। খুলনা দৌলতপুর কলেজ হতে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। ফিরোজ আল মামুন পরিচালিত কালপুরুষ এর প্রযোজক হিসেবে শরীফ উদ্দিন খান দিপু চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন। ‘দেশ দরদী’ ছবির পরিচালক ও প্রযোজক হিসাবে দক্ষতার সাথে পেশাগত কর্মে আত্ম নিয়োগ করেন। ২০০১ শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র সংগঠক হিসেবে ‘‘জিয়া সামাজিক সাংস্কৃতিক ফেরাম’’-এর পক্ষ থেকে পদক প্রাপ্ত হন।

 

৮৮।       মোঃ শহিদুর রহমান খোশনবীশ

১৯৫১ সনে ২রা অক্টোবর বাসাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- জনাব আবু সাইদ খোশনবীশ। জড়াশাহীবাগ ফ্রি প্রাইমারী স্কুলে পড়াশোনার হাতে খড়ি। তারপর প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেছেন ঢাকার গোপিবাগে রামকৃষ্ণ মিশন স্কুলে। কিছুদিন পড়াশোনা করেছেন ইন্টারমিডিয়েট টেকনিক্যাল কলেজ (বর্তমানে বিজ্ঞান কলেজ) তেজগাঁও, ঢাকায়। ১৯৬৮ সনে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর কলেজ, লোয়ারটোপা, মারিহিলস থেকে এস,এস, সি, পাশ করেন ।  ছাত্র জীবন থেকে মেধাবী শহিদুর রহমান খোশনবীশ এস এস সি পরীক্ষায় বিজ্ঞান, ইংরেজী, সমাজ বিজ্ঞানে লেটার প্রাপ্ত হন। ১৯৭০ সনে পাকিস্তান বিমান বাহিনী কলেজ, সারগোদা থেকে এইচ,এস,সি, পাশ করেন। একই বৎসর পাকিস্তান বিমান বাহিনীর কমিশন অফিসার জিডি পাইলট হিসাবে যোগদান  করেন। তখন স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘনঘটা। পি এ এফ একাডেমিতে যোগদানের পর পিতা-মাতা দুজনেই বাঙ্গালী হবার কারণে অন্যান্য বাঙ্গালী ক্যাডেটদের সাথে ১৯৭১ সনের জুন মাসে তাঁকেও রিলিজ করে দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কমিশনার অফিসার পদ অফার করা হয়। তিনি তা প্রত্যাখান করে জুলাই মাসে ঢাকা প্রত্যাবর্তন করেন। পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হবার পর বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে যোগদান করে জিডি পাইলট হিসাবে তিন মাস প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। কিস্ত্ত প্রশিক্ষণ সমাপ্ত না করেই বাড়ী ফিরে আসেন। তিনি ১৯৭৯ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিভাগে সম্মানসহ মাষ্টার্স ডিগ্রী অর্জন করেন। অতঃপর ঢাকা জেলা বারের সদস্য পদ লাভ করে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। ২০০২ সনে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগে এডভোকেট অন রেকর্ড হিসাবে যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি নিজস্ব আইন ব্যবসার পাশাপাশি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবি ফোরামের নির্বাহী কমিটির সদস্য। রোটারী ক্লাবসহ বিভিন্ন সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের সাথে তিনি নিজেকে জড়িত রেখেছেন।

 

৮৯।       মোঃ শহীদুর রহমান শাহজাহানঃ 

মোঃ শহীদুর রহমান শাহজাহান বাসাইল উপজেলার ফুলবাড়ি গ্রামে ১৯৫২ সনে জন্ম গ্রহণ করেন। পিতা মরহুম আলহাজ্ব এম. এ. মুছা, মাতা- মোছাম্মৎ ইয়াতন নেছা। শৈশবে বানিয়ারা পাঠশালায় লেখাপড়া শেষ করে গোপালদিঘী উচ্চ বিদ্যালয় হতে ১৯৬৮ সনে এস. এস. সি. পাশ করে সা’দত কলেজ করটিয়া হতে ইন্টারমিডিয়েট ও ডিগ্রী পাশ করেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ হতে ১৯৭৫ সনে রাষ্ট্র বিজ্ঞানে এম. এ. পাশ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে কাদেরিয়া বাহিনীর হেড কোয়ার্টার কোম্পানীর প্লাটুন কমান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। টাঙ্গাইল পল্লী  বিদ্যুৎ সমিতি বাসাইল উপজেলা এলাকা-৫ এর পরিচালক নির্বাচিত হন। ন্যায়-নিষ্ঠা সততার গুণেই টাঙ্গাইল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সেক্রেটারি ও পরবর্তীতে সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৮০-১৯৯৪ সন এই সুদীর্ঘকাল টাঙ্গাইল জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার ছিলেন। বর্তমানে টাঙ্গাইল জেলা বি. এন. পি’র সম্মানিত সদস্য।

৯০।       মোঃ শামসুজ্জামানঃ

মোঃ শামসুজ্জামান ১৯৪৭ সনের ২ ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম আবু আহমেদ রশীদুজ্জামান, মাতা শামসুন্নাহার। ১৯৬৩ সনে শিবনাথ উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস. এস. সি. পাশ করে ভর্তি হন সা’দত কলেজ করটিয়াতে। সা’দত কলেজ হতেই যথাক্রমে ইন্টারমিডিয়েট এবং বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স পাশ করেন। ১৯৭০ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এম. এ. ডিগ্রী লাভ করেন।

 

৯১।        মোঃ হাবিবুর রহমানঃ

১৯৩৫ সনের ৩১ মে মোঃ হাবিবুর রহমান টাঙ্গাইল শহরের পূর্ব আদালত পাড়ায় জন্ম গ্রহণ করেন। তার পৈত্রিক নিবাস ছিল বাসাইল উপজেলা শহরেই। ১৯৪৯ সনে বিন্দুবাসিনী সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিকুলেশন, সা’দত কলেজ হতে ১৯৫১ সনে ইন্টারমিডিয়েট ও ১৯৫৩ সনে ডিগ্রী পাশ করেন। ১৯৫৬ সনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম. এ ও ১৯৬১ সনে আইন বিষয়ে এল. এল. বি. ডিগ্রী লাভ করেন। স্কুল জীবন থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িয়ে পড়েন। হাবিবুর রহমান মিয়া ওতোপ্রোতভাবে জড়িয়ে পড়েন রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলনে। শহীদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে টাঙ্গাইল শহীদ মিনার নির্মাণে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন। ১৯৫৪ সনে সা’দত কলেজ ছাত্র সংসদের সহ সভাপতি (ভি. পি.) নির্বাচিত হন । রাজনৈতিক কারণে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনের সময় পাকিস্তান সরকার কর্তৃক গ্রেফতার ও কারাবরণ করেন। শিক্ষা জীবন শেষ করে এক সময় সন্তোষ জাহ্নবী উচ্চ বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। কিছু দিন জনপ্রিয়তার সহিত শিক্ষকতা করার পর আইন পেশায় চলে আসেন। টাঙ্গাইল জেলা এডভোকেট বার সমিতির সদস্য হন ১৯৬২ সনে। ১৯৭২ সনে সরকারী উকিল (পি. পি.) হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন। এডভোকেট বার সমিতির ১৯৭৬ সনে সাধারণ সম্পাদক ও ১৯৭৮ সনে সভাপতি হিসাবে নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯৫ সালের ২৯ এপ্রিল শনিবার মৃত্যু বরণ করেন। তিনি টাঙ্গাইল গার্লস স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সুদীর্ঘকাল চেয়ারম্যান, সি.ডি.সি ক্লাবের সেক্রেটারি ও প্রেসিডেন্ট, রাইফেলস ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি ও পরবর্তীতে সিনিয়র সহ-সভাপতি, টাঙ্গাইল মিউনিসিপ্যালের লিগ্যাল এ্যাডভাইজার ও বাসাইল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্নে শিক্ষানুরাগী সদস্য হিসাবে মহান দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি টাঙ্গাইলের বিভিন্ন সাহিত্য, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন।

 

৯২।       মোহাম্মদ হোসেন খান (গিনি মিয়া)

মোহাম্মদ হোসেন খান (গিনি মিয়া) বাসাইল উপজেলার কাউলজানী গ্রামে ১৯১০ সনে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আহাম্মদ আলী খান। শৈশবে পিতৃহারা হয়ে নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে সংসারের হাল ধরেন। একাডেমিক শিক্ষায় উচ্চতর ডিগ্রী লাভের সৌভাগ্য না হলেও তিনি ছিলেন সত্যিকারের আলোকিত মানুষ। ব্যবসা বাণিজ্যের পাশাপাশি এলাকায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নির্মাণে তাঁর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতা রয়েছে। এই সংগ্রামী ন্যায়নিষ্ঠ উদারমনা মানুষটি পবিত্র হজব্রত পালন করেন। ধর্মানুরাগী, মহানুভব এই মানুষটি ১৯৮৬ সনে পরলোক গমন করেন।

 

৯৩।       মোহাম্মদ হোসেন খোকা

            ১৯৩০ সনে বাসাইল উত্তরপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা- আলহাজ মোবারক হোসেন ছিলেন স্থানীয় জমিদার চারুচন্দ্র রায়ের নায়েব। ছোটবেলা থেকেই স্বাধীনভাবে বড় হয়েছেন মোহাম্মদ হোসেন খোকা মিয়া। প্রাথমিক শিক্ষা শেষে টাংগাইল শিবনাথ স্কুল হতে ১৯৪৭ সনে ম্যাট্রিক পাশ করেন । তারপর দু বছর পড়াশোনা করেছেন করটিয়া সাদত কলেজে। সাংসারিক দায়িত্ববোধের কারণে পড়াশোনা শেষ না করেই কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। বন্দর নগরী নারায়ণগঞ্জে দীর্ঘ ৩৩ বছর পাট ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। বর্তমানে তিনি উত্তরপাড়ায় অবসর জীবন যাপন করছেন। একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসাবে তিনি সকলের শ্রদ্ধা অর্জন করেছেন।

 

৯৪।       মৌলভী আজিজুল ইসলাম চৌধুরীঃ

মৌলভী আজিজুল ইসলাম চৌধুরী ১৮৯৮ সনে বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর ঢং পাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম মুন্সি ময়েজ উদ্দিন আহমেদ পন্ডিত। শৈশবে বাসাইল গোবিন্দ  হাই স্কুল হতে ১ম বিভাগে ম্যাট্রিকুলেশন, সা’দত কলেজ হতে ইংলিশ মিডিয়ামে আই.এ পাশ করেন এবং ১ম বিভাগে মোক্তার শিপ পাশ করেন। তৎপর পাবলিক প্রসিকিউটর পদে নিযুক্ত হন। কর্ম জীবনে তিনি একজন প্রতিষ্ঠিত আইনজীবী ছিলেন। টাঙ্গাইল মোক্তার বার এ পর পর তিনবার প্রেসিডেন্ট নিযুক্ত হন। ৬নং কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদে পর পর দুবার সম্মানিত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। টাঙ্গাইল ইউনিয়ন বোর্ড এসোসিয়েশন এর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। টাঙ্গাইল মুসলিম লীগ শাখার সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। করটিয়া জমিদার বাড়িতে বড় তরফের স্টেটের মোক্তার ছিলেন। টাঙ্গাইল শহরে এনোমিটার নিযুক্ত ছিলেন। দরিদ্র মেধাবী ছাত্রদের নিজ বাড়িতে জায়গীর রেখে পড়াশোনার ব্যাপারে সাহায্য করতেন। কন্যাদায়গ্রস্ত ব্যক্তিদের সাহায্য করতেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তিনি আর্থিক সহযোগিতা করতেন। একজন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি হিসাবে এলাকার তিনি ব্যাপক পরিচিতি ছিলেন। 

 

৯৫।       রওশন আরাঃ

এক সময়ের প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট শিক্ষানুরাগী ও বিশিষ্ট লেখিকা।  জন্মস্থান টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলায়, ১৯৩৫ সনে। পিতা মরহুম নূরুল ইসলাম খান, মাতা বেগম রোকেয়া ইসলাম। করাচী বিশ্ব বিদ্যালয় হতে এম. এ ডিগ্রী লাভ করেন। বিশেষ গুণের অধিকারী রওশন আরা কর্মজীবনে ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহর সাথে বাংলা একাডেমির সহকারী সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে করাচি পি. ই. সি. এইচ, কলেজ এবং ইসলামিয়া কলেজ করাচিতে অধ্যাপনা করেন। মোহাম্মদপুর সুইট লিটিল হোম এর প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর পর বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বি. সি. এস) সদস্য নির্বাচিত হন এবং ঢাকার প্রথম শ্রেণীর ম্যাজিষ্ট্রেট এবং সিনিয়র সহকারী সচিব পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। সাহিত্যানুরাগী রওশন আরা খুব ছেলেবেলা থেকেই কবিতা, গল্প লেখা লেখি করতেন। তার লেখা প্রথম কবিতা প্রকাশ হয়, বেগম এ ১৯৪৬ সনে। তারপর বেগম, দিলরুবা, সমকাল, ইত্তেফাক, বাংলার বাণী, বিচিত্রা প্রভৃতি পত্র পত্রিকায় কবিতা গল্প প্রবন্ধ ইত্যাদি নিয়মিত প্রকাশ পেতে থাকে। তিনি যখন অষ্টম শেণীর ছাত্রী তখন বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার আবৃত্তি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয়ে তদানীন্তন ডি, এম সুসাহিত্যিক অন্নদা শংকর রায় কর্তৃক পুরস্কার গ্রহণ করেন।

 

৯৬।       রমজান আলী ভূইয়া

            জন্ম ০৪-০২-১৯৪৪ সনে বাসাইল উত্তরপাড়া গ্রামে। পিতা- মরহুম মোঃ জিয়ারত আলী ভূইয়া। কলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক শিক্ষা শুরু। বাসাইল গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয়ে কিছুদিন পড়া-শোনা করে পরে জামুর্কী হাই স্কুল থেকে ১৯৬০ সনে মেট্রিক পাস করেন।  অতঃপর করটিয়া সাদত কলেজ থেকে আই,এস,সি এবং ১৯৭০ সনে কাগমারী কলেজ থেকে ডিগ্রী পাস করেন। তিনি ১৯৬৬ সনে শিক্ষকতা পেশায় যোগ দেন। ২০০২ সনে বাসাইল গোবিন্দ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয় হতে অবসর গ্রহণ করেন। সদা হাস্যময় মোঃ রমজান আলী ভূইয়া স্থানীয় সকলের নিকট রমজান স্যার নামে পরিচিত।

 

৯৭।       রাশেদা হাবিব রুবি

 

রাশেদা হাবিব রুবি, জন্ম- ১ মার্চ, ১৯৬১ সন সদর ইউনিয়নে বালিনা গ্রামে। পিতা- মরহুম তোফাজ্জল হোসেন। ছয় ভাই-বোনের মধ্যে পঞ্চম। ১৯৭৬ সনে আদমজী হাই স্কুল থেকে এস এস সি, ১৯৮১ সনে হেমনগর কলেজ থেকে এইচ এস সি, এবং পরবর্তীতে বাসাইল এমদাদ হামিদা ডিগ্রী কলেজ থেকে বি এ, পাশ করেন। ১৯৯৭ সনে তিনি বাসাইল সদরের ১নং সংরক্ষিত মহিলা আসনের সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি গাজীপুর, টাংগাইল, কিশোরগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জের সদস্যদের নিয়ে গঠিত সমিতির সভানেত্রী নির্বাচিত হন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, নারী উন্নয়ন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে জড়িত। জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ২০০৫ এ তিনি টাংগাইল জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যোৎসাহী নির্বাচিত হয়েছেন।

 

৯৮।       রিয়াহিন ফারজানা লোপাঃ

রিয়াহিন ফারজানা লোপা ২৮ এপ্রিল ১৯৭৪ সনে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আব্দুর রহমান খান, মাতা ফেরদৌস পারভীন। শৈশবে হলিক্রস স্কুলে লেখাপড়া শুরু। ১৯৯১ সনে স্টার মার্কস সহ প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। ইউনিভার্সিটি উইমেন্স ফেডারেশন কলেজ হতে বাণিজ্য বিভাগে মেয়েদের মধ্যে পঞ্চম এবং সম্মিলিত মেধা তালিকায় ১৬ তম স্থান অধিকার করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগ হতে (বি. কম) সম্মান ও এম. কম উভয় পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। তারপর বনানী কুইনস ইউনিভার্সিটির শিক্ষক হিসেবে ২০০০ সনে যোগদান করেন।

 

৯৯।       লিয়াকত আলী খানঃ

জন্ম ১৯৫৩ সনের ২২ মার্চ বাসাইল গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে। পিতা মরহুম ফয়জুর রহমান খান ছিলেন সরকারী কর্মকর্তা। মাতা মালেকা খাতুন । ছেলে বেলা থেকেই অত্যন্ত বিনয়ী লিয়াকত আলী খান বাসাইল জড়াশাহীভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার পর ১৯৬৮ সনে বাসাইল গোবিন্দ উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস.এস.সি ও সা’দত কলেজ হতে ১৯৭০ সনে এইচ.এস.সি পাশ করেন এবং ১৯৭৩ সনে একই কলেজ হতে বি.কম পাশ করেন। তিনি ১৯৭৭ সনে বাংলাদেশ ব্যাংক রিকুটমেন্ট কমিটি কর্তৃক রূপালী ব্যাংকে যোগদানের মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। ২০০১ সনে ১২ অক্টোবর সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক হিসাবে পদোন্নতি লাভ করেন। পরবর্তীতে ২০০২ সনে চাকুরী জীবনের পাশাপাশি রূপালী ব্যাংক এসোসিয়েশন এর প্রেসিডেন্ট হিসাবে সিলেট সুদীর্ঘ ৭ বৎসর দায়িত্ব পালন করেন।

 

১০০।      শহীদ রওশন আলী খানঃ

শহীদ রওশন আলী খান বাসাইল উপজেলার ঝনঝনিয়া গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আব্দুল গণি খান। শৈশবে কাউলজানী প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক শিক্ষা লাভের পর এলাসিন তারক যোগেন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। সা’দত কলেজ করটিয়া হতে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর পাকিস্তান রেলওয়ে কর্মকর্তা হিসাবে চাকুরীতে যোগদান করেন। ২৫ জুলাই ১৯৪১ সনে কুমুল্লি গ্রামের বিশিষ্ট পোষ্ট মাষ্টার আব্দুল বাসেদ সাহেবের কন্যা মোসাম্মৎ হাজেরা খানমের সঙ্গে শুভ পরিণয় সুত্রে আবদ্ধ হন। সাহিত্য চর্চায় ছিলো বিশেষ অবদান। প্রকাশিত গল্প. উপন্যাস রয়েছে বেশকিছু। ১৯৭১ সনের ৩১ মে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে  হানাদার বাহিনী কর্তৃক নির্মমভাবে নিহত হন।

 

১০১।      শামছুল হুদা আল মাজিদী (লেবু মিয়া)ঃ

 

শামছুল হুদা আল মাজিদী (লেবু মিয়া), পিতাঃ আব্দুল খালেক আল মজিদী। জন্ম ১৯১০ সনে, বাসাইলের উত্তরপাড়া গ্রামে। প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করেন ময়মনসিংহ প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে। ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন ময়মনসিংহ মৃত্যুঞ্জয় হাইস্কুল হতে এবং ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেন ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজ হতে। এরপর কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে কিছুদিন অধ্যয়ন করেন কিন্তু খেলার নেশায় পড়াশুনা স্থগিত হয়ে যায়। তিনি ছিলেন বিশিষ্ট ফুটবল খেলোয়াড়। ১৯৪৪ সন হতে বাসাইল সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন এবং একটানা ২২ বৎসর জনগণের সেবায় আত্ম নিয়োগ করেন। তিনি বিশাল ভূ-সম্পত্তির মালিক ছিলেন। এই জমির উপার্জিত সম্পদ জনগণের সেবায় নিয়োগ করতেন। বাসাইলের আশে-পাশে  চল্লিশ মাইল এলাকায়  বহু সংখ্যক সুপেয় পানির কুপ খনন করেন। তিনি বাসাইল গোবিন্দ হাই স্কুলের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। তিনি তৎকালীর চাঁদ মেমোরিয়াল (বর্তমানে সরকারী উত্তর পাড়া ইউনিয়ন ডিসপেনসারী) এর প্রতিষ্ঠাতা, ইয়ং মুসলিম ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা (বর্তমানে হুমায়ুন সংঘ), উত্তর পাড়া জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা (বর্তমানে উত্তর পাড়া বড় মসজিদের নামে পরিচিত) এবং বাসাইল পূর্ব পাড়া গোরস্থানের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

 

১০২।      শামসুল আলম খানঃ

শামসুল আলম খান, জন্ম ২০ জুন ১৯৪৫ সনের বাসাইল উপজেলার বালিনা গ্রামে। পিতা মরহুম মাহতাব উদ্দিন খান। মাতা মরহুমা ময়তননেছা। শৈশবে গ্রাম্য পাঠশালায় শিক্ষা লাভের পর ১৯৬২ সনে জামুর্কী নবাব স্যার আব্দুলগণি উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিকুলেশেন পাশ করেন। ১৯৬৫ সনে সা’দত কলেজ করটিয়া হতে এইচ. এস. সি. পাশ করেন। কলেজে অধ্যয়ন কালে সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘আনন্দ মজলিস’ ছাত্র সংসদ এর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন এবং বি. এ শ্রেণীতে অধ্যয়নকালে পড়াশুনায় ছেদ পড়ে। স্বাধীনতাত্তোর সময়ে বাসাইল সদর ইউ, পির নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে যথাযথ দায়িত্ব পালন করেন। ২০০২ সনে বাসাইল বি. আর. ডি. বির সম্মানিত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বালিনা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে আছেন।

 

১০৩।     শামছুল হক চৌধুরী মাখনঃ

শামছুল হক চৌধুরী মাখন ১৯২৭ সনের ১ জানুয়ারি টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের ঢংপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম আজিজুর রহমান চৌধুরী ছিলেন পাবলিক প্রসিকিউটর। ১৯৪৬ সনে বিন্দুবাসিনী বালক উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। পরবর্তীতে ১৯৭১ সনে আই. এ ও ১৯৮২ সনে বি. এ পাশ করেন। তিনি ১৯৫২ সনে মোক্তারী পরীক্ষায় পাশ করেন। তিনি ছোট বেলা থেকেই বাংলা ও ইংরেজী সাহিত্য অঙ্গনে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন। তার লেখা ছড়া, করিতা, গল্প, প্রবন্ধ, ভ্রমণ কাহিনী, রম্যরচনা ধাঁ-ধাঁ বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। শামছুল হক চৌধুরী একজন নাট্যকারও বটে। তিনি সিন্ধু বিজয়, তারপর এবং তারপর, চন্দ্র গুপ্ত, সিরাজউদ্দৌলা, চাকভাঙ্গ মধু প্রভৃতি নাটকে অভিনয় করেন। বাংলা একাডেমিক কর্তৃক প্রকাশিত লেখক অভিধানে তিনি একজন তালিকাভুক্ত লেখক।

 

১০৪।    সিরাজুল ইসলাম খান (মালা মিয়া)

 

টাঙ্গাইল শহরে জন্ম। পৈত্রিক নিবাস বাসাইল উপজেলার কাঞ্চনপুর। পিতা- আব্দুল জববার খান ছিলেন একজন সরকারী কর্মচারী। ১৯৪২ সনে শিবনাথ উচ্চ বিদ্যালয় হতে ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করে সাদ’ত কলেজ করটিয়া হতে ১৯৪৪ সনে ইন্টারমিডিয়েট পাশ এবং ১৯৪৬ সনে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৫৯ খ্রিঃ অংক শাস্ত্রে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে ১ম শ্রেণীতে প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। ১৯৫০ সনে ইডেন কলেজের শিক্ষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন, ১৯৫৯ সন পর্যন্ত ইডেন কলেজে অধ্যাপনা করেন।। সুদীর্ঘ ১০ বছর ঢাকা কলেজে অধ্যাপনার পর চিটাগাং কলেজে ১৯৭০ সনে যোগদান করেন। এ সময় সরকারী রাজেন্দ্র কলেজে অধ্যক্ষ হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৭৩ সনে শিক্ষা পরিদর্শক বিভাগে যুগ্ম পরিচালক হিসাবে যোগদান করেন। ১৯৮৬ সনে সুদীর্ঘ কর্মজীবনের অবসান ঘটে।

 

১০৫।      সৈয়দ নূরুল হোসেন সুজাঃ

সৈয়দ নূরুল হোসেন সুজা বাসাইল উপজেলার করাতি পাড়া গ্রামে সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৫ অক্টোবর ১৯৪৯ সনে জন্মগ্রহণ করেন। করটিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়া শুরু করেন। ১৯৬৪ সনে এইচ. এম. ইনষ্টিটিউট হতে এস. এস. সি. পাশ করে সা’দত কলেজ করটিয়া হতে ১৯৬৬ সনে এইচ. এস. সি. পাশ করেন। এ কলেজ থেকেই বি. এ. ডিগ্রী লাভ করেন ১৯৭০ সনে। ছাত্র জীবন থেকেই সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭৩ সনে এল. এল. বি. ডিগ্রী লাভ করেন। ছাত্র জীবন থেকে ভাল ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক ছিলেন । ১৯৬৭ সনে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সা’দত কলেজ শাখার সভাপতি ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি ছিলেন একজন অন্যতম সংগঠক। ‘‘আয়না’’ নামক পাক্ষিক পত্রিকার তিনি ছিলেন সাহসী সম্পাদক। করটিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপিত, লৌহজং উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি, করাতি পাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। ২০০১ সনে এলাকার শিশু শিক্ষার বিকাশে সৃজনী প্রি-ক্যাডেট স্কুল এন্ড কলেজ এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক এর দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি করাতি পাড়া জামে মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি।

 

 

১০৬।      হামিদ রেজা খান (আরজু)ঃ

হামিদ রেজা খান (আরজু) ১৯৫০ সনের ১লা নভেম্বর টাঙ্গাইল জেলার বাসাইল উপজেলার ফুলকি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা শহীদ রওশন আলী খান। শৈশবে পৈতৃক চাকুরীর সুবাদে চিটাগাং লেখাপড়া শুরু করেন। ১৯৫৬ সনে চিটাগাং গভর্নমেন্ট কলেজিয়েট স্কুল থেকে এস. এস. সি. ও চিটাগাং গভর্নমেন্ট কলেজ হতে এইচ. এস. সি. পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হতে সম্মান সহ এম. এ. ডিগ্রী লাভ করেন। বিশিষ্ট ফার্মাসিস্ট হিসেবে ১৯৭৩ সনে আমেরিকার নিউইয়র্কে গমন করেন। ১৯৯৮ সনের ৬ মার্চ পিতার গৌরবোজ্জল স্মৃতিকে ধরে রাখতে এলাকায় শিক্ষা বিস্তার কল্পে গড়ে তুলেন শহীদ রওশন আলী খান মহা বিদ্যালয়।

 

১০৭।      হারুন অর রশিদ খান

            ১৯২৮ সনের ফেব্রুয়ারী মাসে কাঞ্চনপুর পশ্চিমপাড়ার এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ধর্মীয় শিক্ষা দিয়ে তাঁর পড়াশোনা শুরু। কাঞ্চনপুর মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাশ করে পড়াশোনার সমাপ্তি ঘটিয়ে কর্মজীবনে প্রবেশ করেন। ব্যবসা দিয়ে তাঁর কর্মজীবন শুরু। কালমেঘা, ময়মনসিংহ প্রভৃতি এলাকায় কাঠের আরতদারী করতেন। আজীবন পরোপকার ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে সব সময় এলাকাবাসীর পাশে ছিলেন । ফলশ্রুতিতে কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন পরিষদের দুইবার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। প্রথমবার রিলিফ কমিটির চেয়ারম্যান হিসাবে এবং ১৯৮৮ সনে দ্বিতীয় মেয়াদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। ব্যবসা বাণিজ্যে তিনি দূরদর্শিতার পরিচয় দিয়েছিলেন।  জানা যায় তিনি মির্জাপুরের তেগুরীর জমিদারীও একসময় ক্রয় করেছিলেন। আজীবন পরোপকারী, শিক্ষানুরাগী হারুন অর রশিদ খান বিভিন্ন মাদ্রাসা, মসজিদসহ ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান স্থাপনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। গত ২৩-১০-১৯৯৬ সনে তিনি পরলোক গমন করেন।