কাশিল, বাসাইল, টাঙ্গাইল।
বাসাইল হতে দুরুত্ব ৫ কি:মি:। বাসাইল থেকে অটোরিক্সায় যাওয়া যায়।
0
কাশিল ইউনিয়নের বুক চিরে বয়ে গেছে ঝিনাই নদী। কামুটিয়া গ্রাম সংলগ্ন নদীর এই অংশ স্থানীয় ভাষায় নথখোলা নদী নামে পরিচিত। সম্প্রতি ঝিনাই নদীর উপর নির্মিত ব্রীজটি তাই নথখোলা ব্রীজ নামেই ব্যাপকভাবে পরিচিত। নথখোলা ব্রীজে উঠলেই চোখে পড়ে এক বিশাল স্মৃতিসৌধ। উম্মুক্ত নীল আকাশের প্রেক্ষাপটে স্থাপিত এই স্মৃতিসৌধ দর্শনার্থীদের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান। জানা যায় ১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এই কামুটিয়া গ্রামে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ সংঘটিত হয়। পাক বাহিনীর সদস্যরা বাসাইল প্রবেশের জন্য নথখোলা খেয়াঘাটে উপস্থিত হলে এ পারের কামুটিয়ায় ওত পেতে থাকা মুক্তিবাহিনীর সদস্যরা নিজেদের জীবন বাজী রেখে হানাদার বাহিনীর উপর সাহসিকতার সাথে ঝাঁপিয়ে পড়ে। হতচকিত হানাদার বাহিনী মুক্তিবাহিনীর সাথে যুদ্ধে কুলিয়ে উঠতে না পেরে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি স্বীকার করে পিছু হটতে বাধ্য হয়। এই যুদ্ধে বাসাইল প্রবেশের পথে পাক বাহিনী সর্ব প্রথম বাধা প্রাপ্ত হয় এবং মুক্তিবাহিনীর প্রতিরোধের মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয়। কামুটিয়া যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর এই বিজয় পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের ব্যাপক অনুপ্রেরণা যোগায়। স্বাধীনতা যুদ্ধে মহান শহীদ ও বীর যোদ্ধাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে ১৯৯৮ সনে টাংগাইল জেলা পরিষদ কর্তৃক এই স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধের জীবন্ত কিংবদমীত কাদেরিয়া বাহিনীর প্রধান বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বীরউত্তম এমপি বিগত ১৬ নভেম্বর, ১৯৯৮ তারিখে এই স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। শান্ত, স্নিগ্ধ ঝিনাই নদীর পারে সুবিশাল নথখোলা ব্রীজের পাদদেশে অপূর্ব নান্দনিক শৌলীতে নির্মিত এই নথখোলা স্মৃতিসৌধ মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের আত্মত্যাগের মহিমাকে বক্ষে ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে দৃঢ় ও সাহসিকতার ভংগিমা নিয়ে। এই স্মৃতিসৌধ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় ১৯৭১ এর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ, বাসাইলের কামুটিয়া যুদ্ধের প্রতিরোধ স্থল এবং মহান বিজয়ের স্মৃতিকে। পর্যটকদের জন্য নথখোলা স্মৃতিসৌধ এক আকর্ষণীয় স্থান।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS